আজকের দিন তারিখ ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় রাজস্ব ঘাটতি পূরণে এনবিআরকে দায়িত্বশীল হতে হবে

রাজস্ব ঘাটতি পূরণে এনবিআরকে দায়িত্বশীল হতে হবে


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২১ , ১২:৫১ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্যের বরাত দিয়ে গতকাল ভোরের কাগজের খবরে প্রকাশ, ভ্যাকসিনের সুবাধে অর্থনৈতিক কর্মকাÐে কিছুটা গতি ফিরলেও গতি হারিয়েছে ভ্যাট। নানা ধরনের জটিলতার কারণে একদিকে ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন, অন্যদিকে কমেছে ভ্যাট আদায়। যে কারণে দিনে দিনে রাজস্ব ঘাটতি বেড়েই চলেছে। এমন অবস্থা অর্থনীতির জন্য অশনি সংকেত। জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে অর্থাৎ জুলাই-২০ থেকে জানুয়ারি-২১ পর্যন্ত ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৫ হাজার ৮০ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে ভ্যাট আদায় হয়েছে ৪৯ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ সাত মাসে ভ্যাটে ঘাটতি ১৫ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। আর অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে ভ্যাটে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি মাইনাস ২ দশমিক ০৮ শতাংশ। কোভিডজনিত দুর্যোগ দীর্ঘায়িত হওয়ায় এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে স্বাধীনতার পর থেকে প্রতি বছরই রাজস্ব আয় বাড়ছে। কিন্তু এবারই আগের অর্থবছরের তুলনায় রাজস্ব আয় কমতে যাচ্ছে। কমার পরিমাণ প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। এর জন্য শুধু করোনা নয়, অর্থনীতিক বিশ্লেষকরা এনবিআরকেও দায়ী করছেন। রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের যে ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার কথা ছিল, তা নেয়া হয়নি। যেমন অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির কার্যক্রমে অগ্রগতি নেই। আবার নতুন ভ্যাট আইনও সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এছাড়া বিচার-বিশ্লেষণ না করে ঢালাওভাবে কর ছাড় দেয়া হয়েছে। এতে উদীয়মান অনেক খাত থেকে কোনো রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার-আয়তন, বাণিজ্যসহ অন্যান্য তথ্য-উপাত্ত আমলে নিলে নির্দিষ্ট রাজস্ব আহরণ কঠিন কিছু নয়। পরিকল্পিত উদ্যোগ নিলে এটা সম্ভব। সরকারের লক্ষ্য ছিল ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হলে আয় বাড়বে। কিন্তু ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হলেও লক্ষ্যমাত্রার উন্নতি নেই। এতে ভ্যাট আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তা আদায় কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়াবে এনবিআরের জন্য। এমনি পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড করের আওতা বাড়ানোসহ নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তবে এসব পরিকল্পনা খুবই শ্লথ গতির। ২০২১ সালে আমাদের লক্ষ্য মধ্যম আয়ের দেশের সারিতে পৌঁছানো। এ জন্য অপরিহার্য শর্তÑ জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ থেকে ৮ শতাংশ নিশ্চিত করা। বিনিয়োগ বাড়াতে পারলেই কেবল এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। রাজস্ব আয় বাড়ানো এর শর্ত। এ ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে দরকার করবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি। সেখানে রাজস্ব প্রদানে সেবা নিশ্চিত, অনুক‚ল রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আইনকানুন সময়োপযোগী করা গুরুত্ব পাবে। পরিকল্পনাজনিত সমস্যা তো রয়েছেই, সঙ্গে রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক নানা জটিলতা। আছে দুর্নীতির অভিযোগও। এসব বিষয়ে সরকারকে আরো জোরাল ভ‚মিকা নিতে হবে।