আজকের দিন তারিখ ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
অর্থ ও বাণিজ্য পাইকারিতে দাম কমলেও পকেট কাটছে খুচরায়

পাইকারিতে দাম কমলেও পকেট কাটছে খুচরায়


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: অক্টোবর ১০, ২০২২ , ৫:১২ অপরাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য


চট্টগ্রাম প্রতিনিধি :  আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের অব্যাহত দরপতনের কারণে দেশের পাইকারি বাজারেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক বজারের সাথে সমন্বয় রেখে দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। সয়াবিন তেল বোতলজাতে ১৪ টাকা ও খোলা ১৭ টাকা কমানো হলেও চট্টগ্রামের কোথাও সেভাবে বিক্রি হচ্ছে না। খুচরা বিক্রেতারা আগের দামেই পকেট কাটছে ভোক্তাদের। যার কারণে এর সুফল পায় না ভোক্তারা। গত সোমবার ভোজ্যতেলের নতুন দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। দাম অনুসারে ১৪ টাকা কমিয়ে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করবে ১৭৮ টাকায়, ১৭ টাকা কমিয়ে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করবে ১৫৮। এতদিন বোতলে সয়াবিন তেল বিক্রি হতো ১৯২ টাকাতে আর খোলায় ১৭৫ টাকা। বাংলাদেশ ভেজিটেবল ওয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যারার্স অ্যাসোসিয়েশন সয়াবিনের দাম কমানোর এ ঘোষণা দেয় সোমবার। এতে বলা হয়, মঙ্গলবার থেকেই কার্যকর হবে নতুন এ দাম। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এর সুফল পাচ্ছেন না ভোক্তারা।

খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে খাতুনগঞ্জে মণ প্রতি (৩৭.৩২ কেজি) পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৬০০ টাকায়। এছাড়া সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ৫ হাজার ৯০০ টাকায়। খাতুনগঞ্জের তেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমাদের দেশে পাম তেল আসে মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে। অপরদিকে সয়াবিন আসে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা থেকে। বর্তমানে দেশগুলোতে ফসল উৎপাদনের মৌসুম চলছে। যার কারণে পাম ও সয়াবিন তেলের সরবরাহও বেড়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজার কমছে। অন্যদিকে এবার ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াতে এবার পাম তেলের রেকর্ড উৎপাদন হয়েছে। এছাড়া সয়াবিনের সরবরাহও বেড়েছে।

নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৯০ থেকে ১৯২, পাঁচ লিটারের বোতল ৯৩৫ থেকে ৯৪৫ এবং খোলা সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ১৭০ থেকে ১৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের সংগঠন সয়াবিন তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত জানিয়ে গত সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়।

কর্ণফুলী মার্কেটের মুদির দোকানদার মো. শফি সওদাগর বলেন, আমরা কম দামে কিনতে পারছি না, বিক্রি করবো কিভাবে।পাইকারি ব্যবসায়ীদের গুদামে অভিযান চালানো হোক। আমাদের কম দামে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। আমরা অবশ্যই কম দামে বিক্রি করবো।

খুচরা দোকানদার মো. ফারুক বলেন, লিটারে ১৪ টাকা কমে বিক্রি করলে অনেক টাকার ক্ষতি হবে। এই বিষয়টি অনেক ভোক্তাও বুঝতে চান না। ফলে দোকানদারের সঙ্গে প্রতিদিন ছোটখাটো গণ্ডগোল বাধছে। ভোক্তা পর্যায়ে নতুন দরের তেল পেতে আরও চার থেকে পাঁচদিন সময় লাগবে।

চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে সয়াবিন তেলের আন্তর্জাতিক বাজার নিম্নমুখী। এর প্রভাবে পাইকারিতেও দাম কমছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণ পাম তেলের দাম কমেছে ১ হাজার টাকা এবং সয়াবিন তেলের দাম কমেছে মণে ৫০০ টাকা।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব)সহ-সভাপতি নাজের হোসাইন বলেন, আমাদের দেশে বাড়তে সময় লাগে না, কিন্তু কমতে সময় লাগে। এর জন্য সরকারের নজরদারির অভাব। সরকার দাম কমানোর জন্য কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি, শুধু ঘোষণার মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাই আমরা দাবি, দ্রুত ভোক্তা অধিকারেরসহ প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট দিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হোক।