আজকের দিন তারিখ ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
অর্থ ও বাণিজ্য এডিপিতে অব্যয়িত ১ লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকা

এডিপিতে অব্যয়িত ১ লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকা


পোস্ট করেছেন: delwer master | প্রকাশিত হয়েছে: মে ৪, ২০২০ , ৬:০১ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য


দিনের শেষে ডেস্ক : করোনাভাইরাস বার্ষিক উন্নয়নেও হানা দিয়েছে। মার্চ পর্যন্ত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। একই সময়ে গত অর্থবছরে ছিল ৪৭ দশমিক ২২ শতাংশ। এ সময় বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো ৯০ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা ব্যয় করতে পেরেছে। সংশোধিত এডিপির আকার ২ লাখ ১০ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা। মার্চ পর্যন্ত অব্যয়িত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা। ৪৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের এডিপি অগ্রগতির হার ৫০ শতাংশের নিচে। বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে। এদিকে লকডাউনের কারণে পুরো এপ্রিল কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থা মে মাসেও বিরাজ করছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে জুনেও প্রকল্প বাস্তবায়নে খুব বেশি গতি বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। এ অবস্থায় বিরাট অংকের টাকা অব্যয়িত থাকতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ অর্থ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত করোনা প্রণোদনায় ব্যয় করার তাগিদ দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পরিকল্পনা সচিব মো. নূরুল আমিন রোববার যুগান্তরকে বলেন, এখনও অর্থবছরের তিন মাস বাকি রয়েছে। অর্থাৎ এপ্রিলের হিসাব করা হয়নি। মে ও জুন হাতে রয়েছে। সুতরাং এ মুহূর্তে কত টাকা ব্যয় করা সম্ভব হবে না সেটি বলা যাচ্ছে না। এরই মাঝে করোনা সংক্রান্ত নতুন প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। আরও প্রকল্প তৈরি হচ্ছে। সেগুলোতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া পরিস্থিতি উন্নতি হলে জুনেও চলমান প্রকল্পের কিছু কাজ হতে পারে। আইএমইডি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শতাংশের দিক থেকে গত অর্থবছরের চেয়ে চলতি অর্থবছরের নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) বাস্তবায়ন অগ্রগতি কম। কিন্তু অর্থ ব্যয়ের দিক থেকে এখনও অনেক বেশি রয়েছে। গত অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত ৮৩ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ব্যয় হয়েছিল ৭১ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা, এডিপির অগ্রগতি ছিল ৪৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ব্যয় হয় ৫৩ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা, এডিপির অগ্রগতি ছিল ৪৫ দশমিক ১৫ শতাংশ। এ হিসাবে গত তিন অর্থবছরের তুলনায় শতাংশের দিক থেকে চলতি অর্থবছরের নয় মাসে এডিপি বাস্তবায়নে অগ্রগতি কম। বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, করোনার কারণে সংশোধিত এডিপি অনুমোদনের পর থেকে প্রকল্পের কার্যক্রম প্রায় স্থগিত রয়েছে। এ অবস্থা কিছুটা দীর্ঘায়িত হলে উন্নয়ন বরাদ্দের অনেক টাকাই অব্যয়িত থাকবে। এ টাকা প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে কাজে লাগানো যায়। ফলে প্রণোদনার জন্য যে অর্থ সংকট রয়েছে তা কেটে যাবে। এছাড়া এ সময়ে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ছাড়া বাকিগুলোতে বরাদ্দ স্থগিত করা উচিত। কেননা পরিস্থিতির উন্নতি হলে পরবর্তী সময়ে সেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে। এতে এমন কোনো বড় ক্ষতি হবে না। আইএমইডি’র প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের নয় মাস পেরিয়ে গেলেও ৫০ শতাংশের নিচে বাস্তবায়ন হার রয়েছে ৪৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের। এগুলোর মধ্যে কয়েকটি হল- সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, সেতু বিভাগ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (থোকসহ), ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এছাড়া আরও যেসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এ তালিকায় রয়েছে- পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, কৃষি মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, পরিবেশ বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা বিভাগ, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয় এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।