আজকের দিন তারিখ ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ আক্রান্ত বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকলেও দুই শিশুকে ছুঁতে পারেনি করোনা….

আক্রান্ত বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকলেও দুই শিশুকে ছুঁতে পারেনি করোনা….


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ১৪, ২০২০ , ৮:১৫ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ


বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আক্রান্ত বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকলেও করোনা ছুঁতে পারেনি নুসরাত ও আলিফা নামে দুই শিশুকে। শিশু নুসরাতের বয়স ১ বছর সাত মাস এবং আলিফার বয়স দেড় বছর। নুসরাত বাউফলের নওমালা গ্রামের আব্দুস সালামের এবং আলিফা চন্দ্রবাড়িয়া গ্রামের আরিফ হোসেনের মেয়ে। প্রশাসন ঘোষিত প্রাতিষ্ঠানিক আইসিউলেশন কেন্দ্র পটুয়াখালীর বাউফলের বগা বন্দরের ডা. ইয়াকুব শরীফ ডিগ্রি কলেজ থেকে গত মঙ্গলবার দুপুরে স্বাস্থ্য বিভাগের ছাড়পত্র ও ফুলেল শুভেচ্ছা নিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থাবস্থায় বাড়ি ফেরেন নুসরাতের বাবা সালাম ও আলিফার মা শিল্পী বেগম। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে জানা গেছে, লকডাউনের সময় গত ২৫ মার্চ বাবা-মায়ের সঙ্গে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রামের বাড়ি ফেরার পথে বগা বন্দরের ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশের হাতে আটক হয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে বাধ্য হন শিশু নুসরাত ও আলিফা। নমুনা সংগ্রহ করে পাঠালে নুসরাতের বাবা সালাম ও আলিফার মা শিল্পী বেগমের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়া গেলেও করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট আসে শিশু নুসরাত ও আলিফার। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকা কালিন শিশু দুটি তাদের বাবা-মায়ের কাছে ছিলো। করোনা পজেটিভ রিপোর্ট আসার পরে আলিফাকে তার মায়ের কাছ থেকে বাবার কাছে আর নুসরাতকে তার মায়ের কাছে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। এদিকে একই সঙ্গে থেকেও করোনায় স্ত্রী শিল্পী বেগম আক্রান্ত হলেও আক্রান্ত হননি স্বামী আরিফ ও স্বামী সালাম আক্রান্ত হলেও আক্রান্ত হননি স্ত্রী সাহিদা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে আরো জানা গেছে, দুপুরে স্বাস্থ বিভাগের ছাড়পত্র আর ফুলেল শুভেচ্ছা নিয়ে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরেছেন করোনা জয়ি নওমালা গ্রামের সালাম ব্যাপারি (৩৯), বগা এলাকার শিল্পী বেগম (২০), চন্দ্রদ্বীপের রায় সাহেবে চরের রিপন (১৮), সদর উপজেলা বাউফলের বিলবিলাস গ্রামের মিলনগাজী (২৮) ও পাশের উপজেলা গলাচিপার বকুলবাড়িয়া গ্রামের মনিয়া বেগম (১৫) ও গাজী সরদার (৩৫) নামে ছয় জন। করোনা পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার পরে সালাম ব্যাপারি, শিল্পী বেগম, মনিয়া বেগম ও গাজী সরদার বগা বন্দরের ডা. ইয়াকুব শরীফ ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে ও মিলন গাজী বাউফল সরকারি কলেজ কেন্দ্রে প্রাতিষ্ঠানিক এবং রিপন চন্দ্রদ্বীপে হোম আইসোলিউশনে থেকে চিকিৎসা নেয়। নির্ধারিত সময় শেষে পূন:রায় এদের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠালে করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়। সহকারি কমিশনার (ভূমি) আনিচুর রহমান বালী, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা (পিকে সা) ও ওসি মোস্তাফিজুর রহমানের উপস্থিতিতে ছাড়পত্র দিয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান স্বাস্থ্য বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা স্বাসথ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা (পিকে সা) বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত বাবা মায়ের সঙ্গে থেকেও শিশু দুটির করোনায় আক্রান্ত না হওয়ার বিষয়টি অলৌকি ও বিরল ঘটনা। উল্লেখ, গত ২ এপ্রিল থেকে মোট ১৭৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠালে রিপোর্ট হাতে পাওয়া ১২৫ জনের মধ্যে ১২ জন করোনা পজেটিভ। এদের মধ্যে বরিশাল শেবাচিমে আইসোলিউশনে মৃত্যু হয় কালিশুরী বন্দর এলাকার হালিম বক্স (৫০) নামে এক চা বিক্রেতার। এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার (৭ মে) কালাইয়া ইদ্রিস মোল্লা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলিউশনে থেকে পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফেরেন পূর্ব কালাইয়া গ্রামের একই পরিবারের ৫ জন।