আজকের দিন তারিখ ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জালশুকায় অন্যচিত্র

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জালশুকায় অন্যচিত্র


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ১, ২০২০ , ৬:২৩ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ


ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি : গ্রামে ঢোকার মুখে বাঁশের ব্যারিকেড। এরপাশেই একটি বেসিন। বেসিনের ওপর রাখা ৩টি বোতল। এর একটি হাত ধোয়া এবং শরীরে স্প্রে করার,অন্য দুটি গাড়ি জীবানুমুক্ত করার। বেসিনের পানির ড্রামের ওপর সাটানো একটি নোটিশ। এতে লেখা ‘প্রিয় গ্রামবাসী,আসসালামু আলাইকুম। একটি বিশেষ ঘোষণা। সকলের অবগতির জন্যে জানানো যাচ্ছে যে,প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনার আতঙ্কে সারা বিশ্ববাসী এখন আতঙ্কিত। তাই গ্রামের সর্বসাধারণ ভাইবোনদের জানানো যাচ্ছে যে,আপনারা সকলে যার যার ঘরে অবস্থান করুন। অপ্রয়োজনে বাইরে ঘোরাঘুরি করবেন না। গ্রামের মুল রাস্তায় জীবানুনাশক স্প্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সুতরাং গ্রাম থেকে বাহির হওয়ার সময় ও প্রবেশের সময় জীবানুনাশক স্প্রেটি ব্যবহার করুন। যদি কেউ গাড়ি নিয়ে আসা যাওয়া করেন তবে উক্ত স্প্রে দিয়ে আপনার গাড়িটিও স্প্রে করবেন। উক্ত কাজটি নিজে করুন এবং অন্যকেও উৎসাহিত করুন। বি: দ্র: লেখা হয়েছে, উক্ত কাজটি করার ক্ষেত্রে কেউ যদি আপত্তি পোষণ করে বা কারো সাথে দুর্ব্যবহার করেন তার প্রতি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অতএব,নিজের জীবনকে মুল্যায়ন করুন,গ্রামকে ভাইরাস মুক্ত রাখুন। ’ করোনা পরিস্থিতিতে সচেতনতা সৃষ্টিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের জালশুকা গ্রামের যুবকদের এই ব্যবস্থা। রবিবার বিকেলে এই কার্য্যক্রম চালুর আগে ২৪ মার্চ নিজের গ্রাম ও আশপাশের এলাকায় জীবানুনাশক স্প্রে করে তারা। এই যুবকদের একজন রেজাউল হক বুলু জানান,গ্রামের ভেতর আসা-যাওয়ার সময় সবাই যেন জীবনামুক্ত হতে পারেন সেইজন্যে তারা এই ব্যবস্থা নিয়েছেন। তাছাড়া হুট করে কেউ যেন গ্রামের ভেতর গাড়ি নিয়ে ঢুকে না পড়ে। সেজন্যে বাঁশের ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। সেখানে নেমে গাড়ির যাত্রীরা নিজে ও গাড়ি জীবনামুক্ত করেই গ্রামে ঢুকবেন। মোট কথা গ্রামে যেন প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ঢুকতে না পারে সেটাই আমাদের চেষ্টা। বড়াইল ইউনিয়নের এই গ্রামটিতে আড়াই হাজার লোকের বাস। এরমধ্যে এই মুহূর্তে গ্রামে ৫ জন প্রবাসী রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন ইটালি থেকে আসা। বুলু জানান,ইটালি আগত ব্যক্তি হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। অন্য ৪ জনের হোম কোয়ারেন্টিন শেষ হলেও তারা অবাধে ঘুরাফেরা করছে না। তাছাড়া গ্রামের বাসিন্দা যারা ঢাকা এবং অন্যান্য জায়গা থেকে এসেছেন তাদেরকেও আমরা সচেতন থাকার অনুরোধ করছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-নবীনগর সড়ক থেকেই গ্রামে প্রবেশের এই সড়ক শুরু। দেড়-দু’শো ফুট এগিয়ে একটি বাংলো ঘর,‘লালকুটির’। এর সামনে বসেই গ্রামে লোকের চলাচল নজরে রাখেন সোহাগ,রিজেন,আলমগীর,মজিবুর,শুভন,রিয়াদ,দুলন,মামুন,জসিম,ক্যাডেট ইকরাম,রাজু,আরমান। জালশুকা ছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্য আরো কয়েকটি গ্রামে যুবকদের এমন সচেতনতা কার্যক্রম রয়েছে।