দিনের শেষে প্রতিবেদক : শনিবার বিকেলেই তার প্রিয় আড্ডাস্থল সোনালী অতীত ক্লাবে আসার কথা ছিল। হ্যাঁ, করোনাকালের এই সময়টায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই আড্ডা। কিন্তু শরীরটা বেশি ভালো লাগছিল না বলে সেদিন বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় যোগ দেননি ফুটবলার কাম কোচ নুরুল হক মানিক। কে জানতে আর কোনোদিনই বন্ধু, সতীর্থদের সঙ্গে সেই আড্ডায় আর কখনোই আসা হবে না তার। সবাইকে শোকে ভাসিয়ে রোববার, ১৪ জুনের দুপুরে নিজ বাসায় ইন্তেকাল করেছেন মোহামেডানের সাবেক এই অধিনায়ক (ইন্না লিল্লাহি ওয়া… রাজিউন)। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মানিক। তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক পুত্র ও এক সন্তান রেখে গেছেন। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ জানান- ‘বাফুফের যুব দলের জন্য যে ২০ জন কোচ আছেন তাদেরই একজন ছিলেন নুরুল হক মানিক। হার্ট অ্যাটাক করার পর তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে পথেই তার মৃত্যু হয়। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিনা, সেটা পরীক্ষা করা হবে। তারপর পরিবারের সম্মতি অনুযায়ী তার দাফনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ বাংলাদেশ দলের জার্সিতে জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা তার প্রায় দশ বছরের। খেলোয়াড়ি জীবনে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রে খেলেছেন। ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার পরও ফুটবলের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলেন কোচ হিসেবে। বাফুফের অধীন ইয়ুথ কোচের দায়িত্ব পালন করছিলেন মানিক। গত বছর মার্চে কক্সবাজারে চ্যানেল আই আয়োজিত বিচ ফুটবলের ফাইনালে মোহামেডানের বর্ষীয়ান দলের হয়ে শিরোপা জয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন নুরুল হক মানিক। ফাইনালে তার জোড়া গোলেই মোহামেডানের বর্ষীয়ান দল হারায় মুক্তিযোদ্ধার বর্ষীয়ান দলকে। সেই টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি গোলদাতার ট্রফিও পান মানিক। হয়তো আবার একদিন কক্সবাজারে বিচ ফুটবল হবে। মানিক সেই ম্যাচ দেখবেন আকাশের তারা হয়ে! পেশাদার ফুটবল কোচ হাসি-খুশি এই ফুটবলের মানুষটিকে হারিয়ে ফুটবলাঙ্গন শোকে কাতর। ক্রীড়াঙ্গনের সর্বস্তরের মানুষ নুরুল হক মানিকের মৃত্যুতে শোক এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।