আজকের দিন তারিখ ১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ পানিবন্দি ৫০ পরিবার

পানিবন্দি ৫০ পরিবার


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ৪, ২০২৩ , ৫:৩৬ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ


পঞ্চগড় প্রতিনিধি : পঞ্চগড়ে কালভার্টের মুখে অপরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো নির্মাণ করায় নিষ্কাশন হচ্ছে না পানি। ফলে কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে বিপাকে পড়েছে অন্তত ৫০টি পরিবার। পঞ্চগড় পৌর শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর জালাসী এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। এর বাইরেও পৌরসভা এলাকার কামাতপাড়া, তুলার ডাঙ্গা, নিমনগর খালপাড়া, হঠাৎপাড়া, পুরানা ক্যাম্পসহ নদীসংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। উত্তর জালাসী এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, পানি নিষ্কাশনের জন্য কালভার্ট রয়েছে। সেখান দিয়েই প্রতিবছর পানি চলে যায়। কিন্তু এ বছর কালভার্টের মুখের জমিতে অবকাঠামো নির্মাণ করায় পানি যাচ্ছে না। তাদের অভিযোগ, কালভার্টের সামনের ৭০ শতক জায়াগায় মাটি ভরাট করে চারদিকে ইটের বাউন্ডারি দিয়েছেন লিটন নামের এক ব্যক্তি। এতে বন্ধ রয়েছে পানির গতিপথ। ফলে বিপরীত দিকের অন্তত ৫০টি পরিবার চরম ভোগান্তিতে রয়েছে। উত্তর জালাসী এলাকার আব্দুল মোমিন বলেন, ঈদের আগের দিন থেকে আমাদের এই সমস্যা, কবে শেষ হবে কে জানে। প্রত্যেকটি পরিবারেই চুলা বন্ধ, রান্না হচ্ছে না। শুকনো খাবার খেতে হচ্ছে। ওই এলাকার সলিমত আলী বলেন, ৬ দিন ধরে আমরা পানিবন্দি। ঘরে পানি ঢুকেছে। এজন্য রাতে বাড়িতে থাকতে পারছি না। আশপাশের মানুষজন আমাদের রান্না করে খাবার দিচ্ছেন। গত বর্ষায় আমাদের বাড়িতে পানি ওঠেনি। এখন কালভার্ট দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ থাকায় আমাদের গ্রামের প্রায় ৫০টি বাড়িতে পানি উঠেছে। সিরাজুল ইসলাম নামের আরেকজন বলেন, কালভার্টের সামনে যখন মাটি ভরাট করা হয় তখনই আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম, মেয়রকে জানিয়েছি। এখানে পানি নিষ্কাশনের জন্য আলাদা কালভার্টের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিলো, কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। এখন আমাদের একটা স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। এভাবে পানিবন্দি থাকা যায় না। বিলকিস বেগম নামের অপরজন বলেন, ঘরের মেঝে পর্যন্ত পানি। চলাচল করা যাচ্ছে না। রাত নির্ঘুম থাকতে হয়। শিশু-বয়স্করা বেশি দুর্ভোগে। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কালভার্টের সামনে পানির গতিপথ আটকে অবকাঠামো নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে জমির মালিক লিটন বলেন, আমি অবৈধভাবে কিছু করিনি। পৌরসভার অনুমতি নিয়েই মাটি ভরাট এবং বাউন্ডারি করেছি। পানি নিষ্কাশন বিষয়ে বলেন, এটা প্রশাসনের কাজ। আমি স্থানীয়দের চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তার জন্য ৬ শতক জমি ছেড়ে দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর লুৎফর রহমান বলেন, কালভার্টের পাশে আগে ফাঁকা জায়গা ছিলো। এখন যে যার মত ভরাট করে বসত গড়েছেন। কেউ কারো জায়গা দিয়ে পানি যেতে দিচ্ছে না। কদিন ধরেই আমি চেষ্টা করতেছি, কিন্তু কেউ ভ্রুক্ষেপ করছে না। তারপরও মেয়রের সঙ্গে কথা বলে একটা সুরাহার চেষ্টা করবো। তিনি বলেন, কালভার্টের সামনের এই বাউন্ডারিটা যার জমি সে পৌরসভার অনুমতি নিয়ে করেছেন, অনুমতি দিয়েছেন আগের মেয়র। আমরা চাইলেই এটা ভাঙতে পারি না। পঞ্চগড় পৌরসভার মেয়র জাকিয়া খাতুন বলেন, টানা এবং ভারী বৃষ্টির ফলে বিভিন্ন নিচু এলাকায় মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনে চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদুল হক বলেন, দুর্গত এলাকায় শুকনা খাবার ও খিচুড়ি বিতরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে তাদের সহায়তা করা হবে।