আজকের দিন তারিখ ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সোমবার, ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
অর্থ ও বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের সহায়তা তহবিল স্থায়ী রূপে চায় বিএসইসি

ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের সহায়তা তহবিল স্থায়ী রূপে চায় বিএসইসি


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ২৪, ২০২১ , ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য


দিনের শেষে প্রতিবেদক : ২০১০ সালের ধসে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তা করতে বর্তমানে ‘পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তা তহবিল’শীর্ষক একটি তহবিল চলমান রয়েছে। এই তহবিলকে স্থায়ী তহবিলে রূপান্তর করতে চায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা চেয়ে গত সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে বিএসইসি। ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে ধসের প্রায় তিন বছর পর ২০১৩ সালে ৯০০ কোটি টাকার ‘পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তা তহবিল’ এই তহবিল গঠন করা হয়। এটি পরিচালনার জন্য একই বছর অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে একটি নীতিমালা করে দেয়া হয়। সে অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের ঋণ দিয়ে আসছে রাষ্ট্রায়াত্ব বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানি ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।
বিএসইসি ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সহায়তা করতে বর্তমান তহবিলের মেয়াদ আরও এক বছর বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেছে। বিএসইসি বলেছে, বিনিয়োগকারীদের নেওয়া সর্বশেষ ঋণের টাকা পরিশোধের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়াতে চায়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবকে পাঠানো ওই চিঠিতে তহবিল গঠনের পটভূমিও তুলে ধরেছে বিএসইসি। চিঠিতে বলা হয়, ২০১০ সালে পুঁজিবাজার ভয়াবহ ধসের সম্মুখীন হয়। তখন দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের মূল্যসূচক নিচে নামতে ও বিনিয়োগকারীদের মূলধন কমতে থাকে। মার্জিন ঋণগ্রহীতা অনেক বিনিয়োগকারীর পোর্টফোলিও ফোর্স সেলের আওতায় চলে যায়। আর যেসব মার্চেন্ট ব্যাংক ফোর্স সেল করেনি, তাদের দেওয়া ঋণের টাকা দীর্ঘ মেয়াদে আটকে যায়। এতে বিনিয়োগকারীরা চরম হতাশ হয়ে পড়েন এবং বাজারের প্রতি আস্থা হারাতে থাকেন। বাজার চাঙা করার নানামুখী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে তখন ৯০০ কোটি টাকার তহবিলটি গঠন করা হয়। তহবিলটি থেকে দেয়া ঋণের সরল সুদ প্রথম দফায় ৯ শতাংশ থাকলেও পরে তা কমিয়ে ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। ২০১৯ সালের মে মাসে নতুন সিদ্ধান্তে বলা হয়, ঋণের সুদ ও আসল বর্তমানে ৪ শতাংশ সরল সুদে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ১২টি কিস্তিতে ৩ বছরে পরিশোধযোগ্য।
বিএসইসি চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ৯০০ কোটি টাকার ঋণের বিপরীতে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আদায় হয়েছে ৯৫৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আদায়ের হার শতভাগ। পুঁজিবাজারে লেনদেনের নিম্নগতির ধারা ঠেকাতে পরে ২০১৯ সালের মে মাসে আদায় করা টাকা থেকে ৮৫৬ কোটি টাকার একটি আবর্তনশীল তহবিল গঠন করে সরকার। তহবিলটির মেয়াদও তিন বছর বাড়িয়ে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়।
বিএসইসি মনে করছে, ঋণ পরিশোধের বর্তমান মেয়াদও এক বছর বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা দরকার। কারণ, ঋণ পরিশোধের মেয়াদ না বাড়িয়ে কিস্তি নির্ধারণ করলে ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধে কম সময় পাবে। এতে কিস্তির পরিমাণও বাড়বে, যা সময়মতো ঋণগ্রহীতাদের পক্ষে পরিশোধ করা কষ্টসাধ্য হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সূত্রগুলো জানায়, অর্থ বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রস্তাবের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আইসিবি সূত্রে জানা যায়, শুরুর দিকে ১০৮টি ব্রোকার হাউসের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬৬৮ জন। আর মার্জিন অংশে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল ৩৮ হাজার ৯৪৬ জন। তবে ৯০০ কোটি টাকা ঋণের এক-তৃতীয়াংশই পেয়েছেন আইসিবি ও তার দুই সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শেয়ার ব্যবসা করা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা।