আজকের দিন তারিখ ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
বিনোদন আলাউদ্দীন আলী বেঁচে থাকবেন অবিস্মরণীয় সুরে

আলাউদ্দীন আলী বেঁচে থাকবেন অবিস্মরণীয় সুরে


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ১০, ২০২০ , ১০:২২ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: বিনোদন


দিনের শেষে প্রতিবেদক :   বরেণ্য গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলাউদ্দিন আলী আর নেই। রোববার বিকেল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর মহাখালীর আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি। তার মৃত্যুতে শোবিজ অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অসংখ্য জনপ্রিয় গান লিখেছেন ও সুর করেছেন তিনি। বাংলা গান, বিশেষ করে বাংলা চলচ্চিত্রে বহু শ্রোতাপ্রিয় গানের জন্মদাতা আলাউদ্দিন আলী। তিনি শুধু একজন সংগীত পরিচালক নন, একাধারে তিনি সুরকার, নামকরা বেহালাবাঁদকও।

তার লেখা ও সুর করা অসংখ্য জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে প্রথম বাংলাদেশ, আমার শেষ বাংলাদেশ; সূর্যোদয়ে তুমি, সূর্যাস্তেও তুমি ও আমার বাংলাদেশ; আমায় গেঁথে দাওনা মাগো, আছেন আমার মুক্তার, আছেন আমার ব্যারিস্টার; যেটুকু সময় তুমি থাকো কাছে, বন্ধু তিন দিন, এমনও তো প্রেম হয়, জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো, একবার যদি কেউ ভালোবাসতো, সূর্যোদয়ে তুমি, সূর্যাস্তেও তুমি ইত্যাদি।

১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ী থানার বাঁশবাড়ী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আলাউদ্দিন আলী। বাবা ওস্তাদ জাদব আলী। মায়ের নাম জোহরা খাতুন। মাত্র দেড় বছর বয়সে ঢাকার মতিঝিলের এজিবি কলোনিতে চলে আসেন। তিন ভাই, দুই বোনের সঙ্গে সেই কলোনিতেই বড় হতে থাকেন এই গুণী শিল্পী। সংগীতে প্রথম হাতেখড়ি ছোট চাচা সাদেক আলীর কাছে। পরে ১৯৬৮ সালে যন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রজগতে পা রাখেন। শুরুটা শহীদ আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে, পরে প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজের সঙ্গেই কাজ করেন দীর্ঘদিন। লোকজ ও ধ্রুপদী গানের সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা তাঁর সুরের নিজস্ব ধরন বাংলা সংগীতে এক আলাদা ঢং হয়ে উঠেছে বিগত প্রায় চার দশক ধরেই। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের বহু স্বনামধন্য শিল্পী তাঁর সুরে গান করে নিজেদের করেছেন সমৃদ্ধ।

১৯৭৫ সালে সঙ্গীত পরিচালনা করে বেশ প্রশংসিত হন। তিনি গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৯), সুন্দরী (১৯৮০), কসাই এবং যোগাযোগ চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৮৮ সালে শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ১৯৮৫ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও তিনি খ্যাতিমান পরিচালক গৌতম ঘোষ পরিচালিত পদ্মা নদীর মাঝি চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। তিনি সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে সর্বমোট সাতবার এবং গীতিকার হিসেবে একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

প্রসঙ্গত, অনেকদিন ধরেই নানা অসুখে ভুগছিলেন আলাউদ্দিন আলী। ২০১৫ সালের ৩ জুলাই তাকে ব্যাংকক নেওয়া হলে সেখানে পরীক্ষার পর জানা যায়, তার ফুসফুসে একটি টিউমার রয়েছে। এরপর তার অন্যান্য শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি ক্যান্সারের চিকিৎসাও চলছিল। এর আগে বেশ কয়েক দফায় তাকে মহাখালীর আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

বেশ অনেকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন গুণী এই সংগীত পরিচালক। কয়েক মাস ধরে বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিলো। হঠাৎ করে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে শনিবার (৮ আগস্ট) ভোর পৌনে পাঁচটায় তাকে দ্রুত আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। একদিন পার হলে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে।