আজকের দিন তারিখ ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
জাতীয় এইচএসসির অটো পাস নিয়ে সংসদে সমালোচনার ঝড়

এইচএসসির অটো পাস নিয়ে সংসদে সমালোচনার ঝড়


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জানুয়ারি ২৫, ২০২১ , ২:৫০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়


দিনের শেষে প্রতিবেদক : পরীক্ষা না নিয়ে অটো পাস দেওয়ার ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে জাতীয় সংসদে। এতে মেধাবীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, এটা দেশের জন্যও ক্ষতিকর হবে বলে সংসদ সদস্যরা অভিযোগ করেন। রোববার (২৪ জানুয়ারি) পরীক্ষা ছাড়া এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের জন্য জাতীয় সংসদে ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১ পাসের প্রস্তাব করার পর, তা যাচাই বাছাইয়ের প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা এ সমালোচনা করেন। অবশ্য কেউ কেউ এ বিলের মাধ্যমে সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে, সে জন্য সরকারকে ধন্যবাদও জানান। বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ বলেন, সারা বিশ্ব করোনার কারণে বিপর্যস্ত, বাংলাদেশের অবস্থা সবচেয়ে করুন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত স্থবির। পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি করে পরীক্ষা নেওয়া হলে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার টেবিলে বসানো যেতো। আজ আইন পাস করে অটো পাস দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রাথমিক পর্যায় থেকে উচ্চ পর্যায় পর্যন্ত ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হবে।
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, সরকার দক্ষতার সঙ্গে করোনা মোকাবিলা করে যাচ্ছে। সব কিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। সরকার একটু সচেষ্ট হলে পরীক্ষাও নেওয়া সম্ভব হতো। সরকার এখানে ব্যর্থ হয়েছে। সরকার অটো পাসের ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীদের সর্বনাশ করেছে।  জাতীয় পার্টির সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আমরা অটো পাস না দিয়ে সংক্ষিপ্ত পরীক্ষা নিতে পারতাম। ১৯৭১ এ একটা অটো পাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেটা নিয়ে একটা বদনাম ছিল। বলা হয় অটো পাস। তাই এ অটো পাস এড়ানো যেতো, যদি সরকার একটা সংক্ষিপ্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা করতো।
জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, আগে জীবন, তারপর সব কিছু। অনেকে বলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, অটো পাসে মেধার সংকট হবে। জীবন আগে, সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এর জন্য ধন্যবাদ। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, কিন্তু কওমি মাদরাসা খোলা কেন? বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার নানা দুর্ভোগের মধ্যে এখন যুক্ত হচ্ছে অটো পাস। এইচএসসিতে নির্ধারিত হয়, কে ডাক্তার হবে, কে ইঞ্জিনিয়ার হবে। অতীতের ফলাফরের ওপর ভিত্তি করে মেধার ইনসাফ হয় না। এ আইন পাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে মেধাবী শিক্ষার্থীদের। এটা শুধু তাদের নিজের নয়, দেশেরও ক্ষতি। মুখে বলা হলেও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন খুলে দেওয়া হচ্ছে না?
বিরোধী দলের সদস্যদের বক্তব্যের পর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি বলেন, পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি, কিন্তু শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল। পরীক্ষার আগে করোনার সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় ঠিক তখনই পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এটা শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বে একই অবস্থা। পরীক্ষা বন্ধ রাখতে হয়েছে। কোনো চিন্তা-ভাবনা ছাড়া হঠাৎ করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এটা ভাবার সুযোগ নেই। সব কিছুর ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা সংক্রমিত হওয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে এবং তাদের দ্বারা অভিভাবকদের সংক্রমিত হওয়াও আমরা ঠেকাতে পেরেছি। একজন শিক্ষার্থী হঠাৎ করে এইচএসসিতে এসে ভালো ফলাফল করে না। পূর্বের ধারাবাহিকতা থাকে। পূর্বে দু’টি পরীক্ষা জেএসসি এবং এসএসসির ফলাফলের গড় করে এইচএসসির ফলাফল তৈরি করা হয়েছে। এখন বিলটি পাস হলে তা প্রকাশ করা যাবে। দুই-তিনদিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে। সরকারের ব্যাপক পদক্ষেপের ফলে করোনা সংক্রমণ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। পরীক্ষা দিতে গেলে এ সংক্রমণ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তো। কওমি মাদরাসা খোলা রাখা প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কওমি মাদরাসায় যারা লেখাপড়া করে, তাদের অধিকাংশ এতিম, দুস্থ। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে আবাসিক ব্যবস্থা আছে। তারা যদি সেখানে থাকতে না পারে, আরও সমস্যা হবে। এ বিবেচনায় কওমি মাদরাসা খুলে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়।