আজকের দিন তারিখ ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
অর্থ ও বাণিজ্য মে মাসে পুঁজিবাজারের অর্ধেক লেনদেন তিন খাতে

মে মাসে পুঁজিবাজারের অর্ধেক লেনদেন তিন খাতে


পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ১২, ২০১৬ , ১:২৬ অপরাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য


DSE-CSE-loকাগজ অনলাইন ডেস্ক: দেশের পুঁজিবাজারে প্রায় সাড়ে ৩শ’ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড তালিকাভুক্ত রয়েছে। এগুলো ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে মোট ২০ খাতে লেনদেন হয়। এর মধ্যে মে মাসে ডিএসই’র মোট লেনদেনের অর্ধেকই হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, প্রকৌশল এবং ওষুধ ও রসায়ন এ তিন খাত ঘিরে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বিভিন্ন ইস্যুতে লেগে থাকা দরপতনে এসব খাতের শেয়ারের দাম যৌক্তিক দামের চেয়ে কম থাকার পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি কোম্পানিগুলো দেশের পুঁজিবাজারের পাশাপাশি বিদেশের বাজার থেকে টাকা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে। এ টাকা কোম্পানির ক্যাপাসিটি ও ব্যবসা সম্প্রসারণে ব্যয় করা হবে। এর ফলে কোম্পানিগুলোতে মুনাফা বাড়বে। এ কারণে এসব খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকছেন।

এদিকে, এ‍ তিন খাতের পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে ‘ভোগান্তিতে’ রাখা ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটু আগ্রহ দেখা গেছে। বাজারে তালিকাভুক্ত ৩০ কোম্পানির মধ্যে অধিকতর স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতা থাকায় ব্যাংক খাতের শেয়ার কেনা-বেচায় এপ্রিলের চেয়ে একটু উন্নতি হয়েছে। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বিমা কোম্পানির শেয়ারে ‘ভোগান্তি’ অব্যাহত রয়েছে। বিক্রেতা থাকলেও ক্রেতা না থাকায় এসব কোম্পানির বেশিরভাগ শেয়ারের দাম অভিহিত মূল্যের নিচে লেনদেন হচ্ছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে ডিএসইতে মোট ২২৩ কোটি ৬৮ লাখ ৭৫ হাজার ৩৫৪ শেয়ার থেকে ৮ হাজার ১৪২ কোটি ২১ লাখ ৫০ হাজার ৪৪৮ টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে তিন খাতের ৪৭ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৬৫টি শেয়ার থেকে কেনা-বেচা বাবদ লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৯৭৬ কোটি ২১ লাখ ৭১ হাজার ৯৬৯ টাকা।

যা আগের মাসের চেয়ে ১০ কোটি ৭২ লাখ ২৫ হাজার ৩৩৮ টাকা বেশি। ডিএসই’র মোট লেনদেনের ৪৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের শেয়ার।

ডিএসই’র পাশাপাশি দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, প্রকৌশল এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতগুলোর লেনদেনের পরিমাণে একই অবস্থা দেখা গেছে।

অপরদিকে লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা খাতগুলো হলো- বন্ড, পেপার অ্যান্ড প্রিন্টং, পাট, মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ট্যানারি, সিরামিক, আইটি, ট্রাভেলস, টেলিকম ও বিমা খাতের শেয়ার।

ডিএসইর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মে মাসে লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। এ খাতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৭৭৮ কোটি ২২ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ টাকা। যা টাকার অংকে ডিএসইর মোট লেদেনের ২১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এর আগের মাস এপ্রিলে লেনদেন ১ হাজার ৬৭২ কোটি ৫৯ লাখ ৫১ হাজার ৫৫৩ টাকা। এ খাতে মোট ১৯টি কোম্পানি রয়েছে।

এপ্রিল মাসে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাত টপকে মে মাসে দ্বিতীয় স্থানে চলে এসেছে প্রকৌশল খাত। এ খাতে মে মাসে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৮৪ কোটি ৫০ লাখ ৫৬ হাজার ১৫ টাকা। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এপ্রিল মাসে এ খাতে মোট লেনদেন হয়েছে ৯৪৮ কোটি ৮৬ লাখ ৯৫ হাজার ৯০৩ টাকা। এ খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা ৩২টি।

মে মাসে ১ হাজার ১৩ কোটি ৪৮ লাখ ৩৩ হাজার ৬৫৯ লেনদেন হওয়া দ্বিতীয় স্থান থেকে তৃতীয় স্থানে নেমে এসেছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১২ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এপ্রিল মাসে এ খাতের ২৭টি কোম্পানি থেকে মোট লেনদেন হয়েছে ১৩৪ কোটি ২ লাখ ৯৯ হাজার ১৭৫ টাকা।

অপরদিকে মার্চে তৃতীয়, এপ্রিলে চতুর্থ স্থানে থাকা বস্ত্রখাত আরো এক ধাপ নিচে নেমে অবস্থান করছে পঞ্চম স্থানে। আর ৭৬৭ কোটি ৯৮ লাখ ৯৬ হাজার ৮৭১ টাকা লেনদেন হওয়া পঞ্চম স্থান থেকে চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে ব্যাংক খাত। যা ডিএসই’র মোট লেনদেনের ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

মহাধসের আগে পুঁজিবাজারের ‘প্রাণ’ হিসেবে বিবেচিত এ খাতে তালিকাভুক্ত ৩০টি কোম্পানিতে এপ্রিল মাসে মোট লেনদেন হয়েছিলো ৫২৯ কোটি ৯৩ লাখ ২২ হাজার ৯০৪ টাকা।

এছাড়াও বস্ত্র খাতে বাজারে তালিকাভুক্ত ৪৪টি কোম্পানির এ খাতে মে মাসে লেনদেন হয়েছে ৬৯৯ কোটি ৩৭ লাখ ৪৬ হাজার ১৭৪ টাকা।

বাকি খাতগুলোর মধ্যে মে মাসে ডিএসইতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের অবদান ৪ দশমিক ২৩ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অবদান শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশ, খাদ্য খাতের অবদান ৬ দশমিক ৬১ শতাংশ, পাটখাতের অবদান দশমিক ১৪ শতাংশ, পেপার অ্যান্ড প্রিন্টিং খাতের অবদান দশমিক ১০ শতাংশ, সার্ভিসেস অ্যান্ড রিয়েল এস্টেট খাতের অবদান ২ দশমিক ১৮ শতাংশ, সিমেন্ট খাতের অবদান ৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ, আইটি খাতের অবদান ১ দশমিক ৭২ শতাংশ, ট্যানারি খাতের অবদান ১ দশমিক ০৪ শতাংশ এবং বিমা খাতের অবদান ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, যে খাত থেকে বেশি মুনাফা পাওয়া যাবে, বিনিয়োগকারীরা সে খাতের শেয়ারেই বিনিয়োগ করবেন, এটাই স্বাভাবিক।