আজকের দিন তারিখ ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাবিশ্ব কাবুলে বোরকা কেনার হিড়িক

কাবুলে বোরকা কেনার হিড়িক


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ১৬, ২০২১ , ১২:১৮ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাবিশ্ব


দিনের শেষে ডেস্ক : আফগানিস্তান পুনরায় তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত এক সপ্তাহ ধরে রাজধানী কাবুলে বোরকা কেনার হিড়িক পড়েছে। আফগান সরকারি গণমাধ্যম তোলো নিউজের খবরে বলা হচ্ছে, একটি মার্কেটে বোরকা বিক্রি করেন আরেফ। দেশটির বর্তমান পরিস্থিতিতে হঠাত্ বিক্রি বেড়েছে আরেফের দোকানে। দূর থেকে আরেফের দোকান দেখলে মনে হয় সেখানে নীল রঙের পর্দা টাঙানো আছে। কিন্তু কাছে গেলে বোঝা যায় দোকানের হুকে ঝোলানো আছে অসংখ্য নীল বোরকা। তালেবান কাবুলের চারদিক ঘিরে ফেলার পর থেকে সেখানকার নারীরাও তৈরি হন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য।
আরেফ জানান, আগে বিভিন্ন প্রদেশের নারীরাই তাদের প্রধান ক্রেতা ছিলেন। এখন শহরাঞ্চলের নারীরাও তাদের কাছে থেকে বোরকা কিনছেন। আয়ালিয়া তেমনই একজন ক্রেতা। তিনি বোরকার দাম কমানোর জন্য আরেক জন দোকানদারের সঙ্গে দরদাম করছিলেন। তিনি জানান, গত বছরও বোরকার দাম ছিল ২০০ আফগানি মুদ্রা।
বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে, ২ হাজার থেকে ৩ হাজার আফগানি মুদ্রায়। কাবুলে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নারীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বোরকার দাম বেড়ে গেছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। অনেক দশক ধরে ঐতিহ্যবাহী আফগানি বোরকা বিশ্বে আফগান নারীদের পরিচয় বহন করে আসছে। ঐতিহ্যবাহী এই বোরকা অধিকাংশ সময় নীল রঙের হয়ে থাকে। ভারী কাপড়ে বানানো এই বোরকা এমনভাবে নকশা করা হয়, যেন পরিধানকারীর পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢাকা থাকে। বোরকার চোখের কাছে থাকে পাতলা জালের মতো কাপড়।
’৯০-এর দশকে তালেবান সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন কড়াকড়িভাবে এ ধরনের বোরকা পরে মেয়েদের বাইরে বের হওয়ার নির্দেশনা জারি করা হয়। কেউ এই নির্দেশ না মানলে তালেবানের নৈতিক পুলিশের হাতে জনসম্মুখে বেত্রাঘাতের মতো নির্মম শাস্তি পেতে হতো। ২০০১ সালে তালেবানের পতনের পর ধর্মীয় ও ঐতিহ্যগত কারণে অনেকেই বোরকা পরা অব্যাহত রাখলেও লাখ লাখ আফগান নারী দেশটির নবযুগের সূচনার প্রতীক হিসেবে বোরকাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। তবে চলতি বছরে আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর দেশটির একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ শহর তালেবান দখলে নিলে পরিস্থিতি বদলে যায়। তালেবান দখলকৃত এলাকায় কঠোর শরিয়া আইন জারির হুঁশিয়ারি দিলে দেশটির তরুণী থেকে বৃদ্ধা সবাই নিজেদের বোরকার মজুত বাড়ানো শুরু করেছে বলে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।