আজকের দিন তারিখ ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ৫০ শতাংশে উন্নীত করার অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর

কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ৫০ শতাংশে উন্নীত করার অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: অক্টোবর ৩, ২০২০ , ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে ডেস্ক : ২০৪১ সাল নাগাদ কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ ৫০ শতাংশে উন্নীত করার অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে কোভিড-১৯ মহামারির প্রেক্ষাপটে তাদের চাকরি রক্ষা, নারীর সমতা, ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের অঙ্গীকার নবায়ন ও প্রচেষ্টা জোরদারেরও আহ্বান জানান তিনি। বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে উচ্চ পর্যায়ের এক ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৫তম বার্ষিক অধিবেশনের ফাঁকে ‘ফোর্থ ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অন উইমেন’-এর ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী সাপ্লাই চেইনসহ অন্যান্য বৃহৎ কর্মক্ষেত্রে অভিবাসী শ্রমিকসহ নারী কর্মীদের অবশ্যই রক্ষা করতে হবে। তারা যেন আবারো প্রান্তিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
তিনি বলেন, প্রতিটি মেয়ের কাছ থেকে বিশ্ব উপকৃত হতে পারে। এরই মধ্যে যার সম্ভাবনা উপলদ্ধি করা গেছে। তাদের প্রত্যেকের মেধা ও সক্ষমতার বিকাশ শিক্ষার মাধ্যমে ঘটানো সম্ভব।
আয় ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমেই ক্ষমতায়ন তৈরি হয়। তাই আয় বাড়ানোর উপযোগী কর্মকাণ্ডে নারীদের সম্পৃক্ত করার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত।
শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ এর সময়ে নারীরা বৈষম্যের শিকার হয়েছে। নারীরা পারিবারিক সহিংতার শিকার হচ্ছেন। এ কারণে নারীর ক্ষমতায়নে আমাদের কষ্টার্জিত অর্জন হুমকির মুখে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৫ সালের বেইজিং ডিক্লারেশন অ্যান্ড প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশন জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নে একটি বড় ধরনের রোডম্যাপ তৈরি করেছে। এটি নারীর প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাপকভাবে বদলে দিয়েছে। এটি ইতিবাচক উন্নয়নের অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। তখন থেকে নারী ও মেয়েদের সুরক্ষায় প্রায় সব দেশে আইনি কাঠামো গঠন করে। ২০৩০ এজেন্ডাও সব লক্ষ্যে নারী ক্ষমতায়নকে স্বীকৃতি দিয়েছে। আমরা ডিকেড অব অ্যাকশনে প্রবেশ করেছি, তাই আমাদের অবশ্যই প্রতিশ্রুতি নবায়ন করতে হবে। নারীর ক্ষমতায়ন, অগ্রগতি ও নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত করতে আমাদের প্রচেষ্টা আরো বাড়াতে হবে। নারী ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অসামান্য উন্নয়ন তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের উন্নয়ন এজেন্ডার কেন্দ্রবিন্দুতে নারীদের বসিয়েছিলেন। নারী-পুরুষ সমঅধিকারভিত্তিক একটি সংবিধান নিশ্চিত করেন। আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে নারীদের বাস্তবসম্মত প্রয়োজন পূরণের ওপর জোর দেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষার পাশাপাশি নারীর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে আমরা জোর দিয়েছি। আমাদের উন্নয়নের সক্রিয় কর্মী হিসেবে নারীদেরকে বিবেচনা করি। তারই অংশ হিসেবে ২০১১ সালে সরকার একটি প্রগতিশীল নারী উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করেছি। জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন ৫০টিতে উন্নীত করা হয়েছে। সংসদ নেতা, সংসদীয় উপনেতা, বিরোধী দলীয় নেত্রী ও স্পিকার সবাই নারী। শুধু তাই নয়, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় ৩০ শতাংশ আসন নারীদের জন্য নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে। নারীরা এখন উচ্চ আদালতের বিচারক, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং আরও অনেক কিছু হয়ে উঠছেন। জেন্ডার বাজেটিং, মাইক্রো ফাইন্যান্স এবং এ ধরনের উদ্যোগগুলো নারীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করেছে।
তিনি বলেন, নারীদের ক্ষেত্রে সরকারের বিনিয়োগ নারী সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সুফল বয়ে আনছে। দেশে আজ ২ কোটি নারী কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে নিয়োজিত রয়েছেন। তৈরি পোশাক খাতে কাজ করছেন ৩৫ লাখেরও বেশি নারী। এটি আমাদের বৃহত্তম রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্র। প্রায় ১ হাজার নারী সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে দায়িত্ব পালন করেছেন।
নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী অনেক প্রশংসা অর্জন করেছে। আমাদের নারীরা বাধা ভাঙছেন এবং বিভিন্ন ধরনের পেশায় সফল হচ্ছেন, যা আমাদের আগের প্রজন্ম কখনই কল্পনাও করতে পারত না। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স অনুযায়ী আমরা নারীদের সামগ্রিক ক্ষমতায়নে দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছি। ১৪৯টি দেশের মধ্যে বিশ্বব্যাপী পঞ্চম স্থানে এবং রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে সপ্তম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।