আজকের দিন তারিখ ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাবিশ্ব আফগান ইস্যুতে বিপাকে ভারত!

আফগান ইস্যুতে বিপাকে ভারত!


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ১৭, ২০২১ , ১১:১২ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাবিশ্ব


দিনের শেষে ডেস্ক :  পশ্চিমা সমর্থিত সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করা তালেবান এখন বিশ্ব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। পাল্টে গেছে আফগানিস্তানের সামরিক ও রাজনৈতিক দৃশ্যপট। এমনকি ইতিমধ্যে তালেবানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ার ইচ্ছা জানিয়েছে চীন। এছাড়াও আরো কিছু দেশ এ তালিকায় রয়েছে। বর্তমানে তালেবান নিয়ন্ত্রিত দেশটির সঙ্গে ৬টি দেশের সীমান্ত রয়েছে। এর ফলে অনেক দেশ এক প্রকার অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। এদিকে তালেবানের হাতে ক্ষমতা যাওয়ার পর আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কিত অনেক দেশ।

কৌশলগতভাবে এগিয়ে থাকায় গত কিছুদিনে আফগানিস্তান ইস্যুতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে চীন। এমনকি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন নয়াদিল্লি সফরে এসে আফগানিস্তানে চীনের ভূমিকাকে ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করে গিয়েছেন।

অন্যদিকে আঞ্চলিকভাবে প্রভাবশালী হলেও এক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছে ভারত। কিন্তু এখন পুরো আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ তালিবানের হাতে চলে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে দেশটি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, আফগানিস্তানের ভবিষ্যত যুদ্ধের মাঠে ঠিক হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি না। কিন্তু সেটি যদি আলোচনার টেবিলেও ঠিক হয়ে তাতে ভারত খুব বেশি ভূমিকা রাখতে পারবে না বলেই মনে হয়।

আফগান ইস্যুতে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগে ভারত। আফগানিস্তানে পাকিস্তান কিংবা চীন- কোনো রাষ্ট্রের কার্যক্রমেই নির্ভাবনায় থাকতে পারছে না দিল্লি। চীন-আফগানিস্তান এখন নয়াদিল্লির জন্য বড় চিন্তার কারন হয়ে উঠেছে। ২০১৮ সালে কাতারের রাজধানী দোহায় আফগান শান্তি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে ভারতের নীতি ছিলো ‘ওয়েট এন্ড ওয়াচ’ অর্থাৎ অপেক্ষা ও পর্যবেক্ষণ করা; কিন্তু এখন আর তাদের তালেবানকে এড়িয়ে চলার সুযোগ নেই।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আফগানিস্তানে রয়েছে ভারতের অনেক কূটনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক স্বার্থ। চীন,পাকিস্তানের মতো দেশগুলো আফগানিস্তানের রাজনীতিতে জড়িয়ে গেলে নয়াদিল্লিরও যে দূরে থাকা ঠিক হবে না সেটিও তারা বুঝে গেছে। ইতোমধ্যেই তালেবানের সঙ্গে ভারতীয় কর্মকর্তাদের কয়েক দফা বৈঠকের খবর পাওয়া গেছে। কিন্তু প্রকাশ্য সম্পর্ক স্থাপনে ভারত এখনো অগ্রসর হয়নি।

এক দিকে পাকিস্তান চীনের মিত্র, অন্য দিকে তালেবানের সঙ্গে তাদের রয়েছে পুরনো সম্পর্ক। তাই ভারতীয় বিশ্লেষকদের ধারণা ভারত তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী হলে সেক্ষেত্রে পাকিস্তান বাধা দেয়া কিংবা প্রভাব বিস্তারের মতো কিছু করতে পারে। তারপরও ভারতীয় বিশ্লেষকরা মনে করেন, তালেবানের সঙ্গে সর্ম্পক স্থাপনে ভারতের দ্রুত উদ্যোগী হওয়া উচিত।

আফগানিস্তানের নিযুক্ত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত বিবেক কাটজু বলেছেন, ভারত কেন এখনো তালেবানের মতো শক্তিশালী একটি পক্ষের সঙ্গে সরাসরি উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ করছে না। গোয়েন্দা পর্যায়ের গোপন বৈঠক কখনোই প্রকাশ্য বৈঠকের দাবি পূরণ করতে পারে না। তাই আফগানিস্তানে ভারত হেরে যাচ্ছে বলেই তার অভিমত।

শোকা ইউনিভার্সিটির মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মায়া মিরচাঁদানী বলেন, এবার আফগান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার টেবিলে থাকা উচিত ছিল ভারতের। ভারতের দুটি কারণে এই ভূমিকা নেয়া উচিত। তালেবানের ওপর পাকিস্তানের প্রভাব রুখে দেয়া এবং কাবুলে যাতে এমন একটি প্রশাসন দায়িত্ব নেয়, যাদের সঙ্গে নয়াদিল্লি সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে। বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস