আজকের দিন তারিখ ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// অনলাইন ক্লাসে পিছিয়ে নিম্নবিত্তের সন্তানরা

অনলাইন ক্লাসে পিছিয়ে নিম্নবিত্তের সন্তানরা


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: অক্টোবর ৩, ২০২০ , ৭:৪৮ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে প্রতিবেদক : পুরো পৃথিবীর মতো বাংলাদেশও করোনাভাইরাস মহামারিতে দিশেহারা। মৃত্যুর সাথে সবকিছুই দিয়েছে স্থবির করে। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নেমেছে ধস। এর মধ্যে শিক্ষাখাতের অবস্থা নাজুক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে নতুন করে চালু হয়েছে অনলাইন ক্লাস ব্যবস্থা। যাতে করে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা থেকে পিছিয়ে না পড়ে।তবে অনলাইন ক্লাস ব্যবস্থায় দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। নিম্ন আয়ের সাধারণ পরিবারের সন্তানরা পড়েছে মহাবিপাকে। অনলাইন ক্লাসের জন্য প্রয়োজন এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, মোবাইল ডেটা। তা নিম্ন আয়ের পরিবারের পক্ষে ব্যবস্থা করা কঠিন বিষয়।

এ রকম চিত্র চোখে পড়ে ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষার্থীদেরই করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এতে পড়াশোনা থেকে পিছিয়ে পড়ছে নিম্ন আয়ের পরিবারের সন্তানরা। পরিবার না পারছে দামি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন কিনে দিতে, না পারছে সংসার চালাতে।

পৌরসভার বাসিন্দা লালন মিয়া বলেন, করোনা মহামারিতে যেখানে জীবিকার অভাবে মানুষ না খেয়ে মরতে বসেছে সেখানে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার কথা বলা বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না। কারণ আমাদের একদিন কাজ থাকে তো তিন দিন বসে থাকি। অনলাইন ক্লাস করে মেয়ের স্কুলের শিক্ষকরা। দামি মোবাইল ফোন কিনে দিতে পারি না। তাই দিন দিন আমার মেয়ের পড়াশোনার প্রতি অনীহা চলে এসেছে।

শহরের লোকজন তাদের সন্তানদের অনলাইন ক্লাস করাচ্ছে। তাই তারা প্রযুক্তির দ্বারা অনেক সমস্যা সমাধান করছে। শিক্ষার্থীদের অনলাইনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ক্লাস-পরীক্ষা নিচ্ছে। কিন্তু মফস্বল এলাকার প্রায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরাই এই সুযোগ থেকে পিছিয়ে পড়ছে। যাদের অর্থনৈতিক কাঠামো মজবুত নয়, নেই কোন প্রযুক্তিগত সামর্থ্য, তারা ইচ্ছা থাকলেও অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে সফলতা আনতে পারছে না।

এ বিষয়ে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকরা বলেন, অনলাইনে ক্লাস করতে গেলে একজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ থাকা বাঞ্ছনীয়। তার সাথে সংযুক্ত খরচের বিষয়টি। আমাদের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই অসচ্ছল পরিবারের। তারা কীভাবে মোবাইল ফোন কিনবে। পুরো ধামরাই উপজেলায় শতকরা ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীই অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

অভিভাবক কবির হোসেন বলেন, ধামরাইতে দু’একটা এমপিওভুক্ত স্কুলে অনলাইন ক্লাস চালু করেছে। বেশির ভাগই এখনো পিছিয়েই পড়ে আছে। অনেকে আবার বুঝে না। অপরদিকে, প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের কথা নাই বললাম।

অভিভাবক নাছির উদ্দিন বলেন, অল্প কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাস করার সুযোগ পাচ্ছে। বেশিরভাগই এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় তারা দীর্ঘদিন ধরে পিছিয়ে পড়ছে। যদি সকল শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেটের আওতায় না আনা গেলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা থেকে পিছিয়ে পড়বে।

অনলাইন ক্লাস নিয়ে বিপাকে পড়েছে উপজেলার কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকরা। তারা বেশির ভাগই অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দারিদ্র্যতার কারণে মোবাইল ফোন কেনা সম্ভব নয়। তাই দরিদ্র পরিবারের ছেলে মেয়েরা করোনাকালীন সময়ে ক্লাস করতে পারছে না। তাই অনলাইন ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারের কাছে সাহায্য ও সহযোগিতা চেয়েছেন। তবেই হতদরিদ্র পরিবারের সন্তানরা পড়াশোনার একটু সুযোগ পাবে।