আজকের দিন তারিখ ২৬শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, ১১ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
জাতীয় সাংবাদিকতার পথিকৃৎ মানিক মিয়ার ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

সাংবাদিকতার পথিকৃৎ মানিক মিয়ার ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ


পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ১, ২০১৬ , ১২:০০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়


manik-miaঅনলাইন ডেস্ক: গণমুখী সাংবাদিকতার পথিকৃৎ তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৬৯ সালের এই দিনে মাত্র ৫৮ বছর বয়সে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ক্ষণজন্মা এই সাংবাদিক।

তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ইত্তেফাক গ্রুপের পক্ষ থেকে আজ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দৈনিক ইত্তেফাকের কাজলারপাড় কার্যালয় সংলগ্ন বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদে বাদ জোহর মিলাদ মহফিল ও তবারক বিতরণ, মরহুমের কনিষ্ঠ পুত্র পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর ধানমন্ডির বাসভবনে সকালে কোরানখানি ও এতিমদের মধ্যে তবারক বিতরণ এবং মরহুমের জ্যেষ্ঠ কন্যা মরহুমা আক্তারুন্নাহার বেবী’র বাসভবনে বাদ এশা মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।

নীতির প্রশ্নে, বাংলার মানুষের অধিকারের বিষয়ে মানিক মিয়া কখনো আপস করেননি। দৈনিক ইত্তেফাক ছিল তার সেই সংগ্রামী জীবনের প্রধান হাতিয়ার। দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, প্রবাদপ্রতিম এই ব্যক্তিত্ব দেশের সাংবাদিকতাকে একটানে বদলে দিয়েছিলেন।

ইত্তেফাক পূর্ব পাকিস্তানে যে ভূমিকা পালন করেছিল তা ছিল সময়ের দাবি। সেসময় দৈনিক ইত্তেফাক ও মানিক মিয়ার অবস্থান এবং আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবস্থান ছিল এক ও অভিন্ন। শোষণ-বঞ্চনা, সাম্প্রদায়িকতা, রাষ্ট্রের স্বৈরাচারী আচরণের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে মানিক মিয়ার কলম ছিল সোচ্চার।

শুধু সাংবাদিক কিংবা রাজনীতির পথপ্রদর্শকই নন, মানুষ হিসাবেও তিনি ছিলেন আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী। তার সংস্পর্শে যিনি একবার এসেছেন তিনি তার সম্মোহনী ব্যক্তিত্বের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছেন। মানিক মিয়া ছিলেন উদার গণতন্ত্রের ধারক। একজন রাজনীতিমনস্ক সাংবাদিক হয়েও তাঁর রাজনৈতিক কোনো উচ্চাভিলাষ ছিল না, ছিল না ব্যক্তিগত কোনো লোভ।

পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক বৈষম্যের কথা সহজ ভাষায় মানিক মিয়া মানুষের সামনে তুলে ধরতেন। তিনি ছিলেন নির্ভীক সাংবাদিকতার কিংবদন্তী পুরুষ, আধুনিক সংবাদপত্রের রূপকার, বাঙালি জাতীয়তাবাদ আন্দোলনের অন্যতম প্রবক্তা। ‘রাজনৈতিক ধোঁকাবজি’, ‘রাজনৈতিক মঞ্চ’ আর ‘রঙ্গমঞ্চ’ শিরোনামে কলাম লিখে বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনতাকামী করে তোলেন মানিক মিয়া। ‘মোসাফির’ শিরোনামে তাঁর ‘রাজনৈতিক মঞ্চ’ কলামে নির্ভীক সত্য ভাষণ, অনন্য রাজনৈতিক দিক-নির্দেশনা এবং গণমানুষের প্রতি ভালোবাসার কারণেই বাংলার মানুষের হৃদয়ে তিনি অবিনশ্বর হয়ে রয়েছেন।

মানিক মিয়া প্রচলিত অর্থে শুধুমাত্র একজন সাংবাদিক ছিলেন না। বরং সাংবাদিকতার মাধ্যমে মানুষের মুক্তির পথ রচনার ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার আপসহীন মনোভাবের কারণে প্রতিক্রিয়াশীল পাকিস্তানি শাসকরা বার বার তার কণ্ঠকে স্তব্ধ করতে চেয়েছে। দৈনিক ইত্তেফাকের ওপর বার বার নেমে এসেছে বিপর্যয়। বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনে দৈনিক ইত্তেফাক এক অসামান্য ভূমিকা পালন করেছিল। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে আপসহীনভাবে তিনি সত্য প্রকাশ করেছেন।