আজ জন্মদিন, নেই শুধু মানুষটি
পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৪, ২০১৬ , ১২:২৬ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়
কাগজ অনলাইন ডেস্ক: আজ ৪ জুন। সাপ্তাহিক বেগম পত্রিকার সম্পাদক নূরজাহান বেগমের ৯১তম জন্মদিন। গত বছরও তাকে নিয়েই জন্মদিন পালন করেছে বাংলাদেশের মানুষ।
এ বছর আর তিনি আমাদের মাঝে নেই। জন্মদিনের মাত্র ১২ দিন আগে গত ২৩ মে তিনি সবাইকে কাঁদিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেছেন না ফেরার দেশে।
১৯২৫ সালের এমন একটি শুভ দিনে চাঁদপুর জেলার চালিতাতলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নুরজাহান বেগম। তাকে ছাড়াই আজ জন্মদিন উদযাপিত হবে।
মৃত্যুর পর এটাই তার প্রথম জন্মদিন। নূরজাহান বেগমের প্রয়াণে শিল্প সাহিত্য অঙ্গনে গভীর শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। তাই এই জন্মদিনকে ঘিরে দেশের নারী লেখক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, ভক্ত, গুণগ্রাহী ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিশেষ উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি শোকের আবহ বিরাজ করছে।
নূরজাহান বেগমের জীবনের নানা জানা-অজানা অধ্যায় ও পারিবারিক জীবন নিয়ে নির্মিত হয়েছে তথ্যচিত্র ‘ইতিহাসের কিংবদন্তি নারী’। এটি নির্মাণ করেছেন নূরজাহান বেগমের নাতনি প্রিয়তা ইফতেখার। নানির জন্মবার্ষিকীতে তার প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা জানাতেই এই উদ্যোগ।
আজ বেলা ১১টায় বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের স্টার সিনেপ্লেক্সে দেখানো হবে তথ্যচিত্রটি। নূরজাহান বেগম ছিলেন পিতা-মাতার একমাত্র সন্তান। প্রথমে নাম ছিল নূরুন নাহার। মা-বাবা আদর করে ডাকতেন নূরী৷
পরে নানি নূরজাহান বেগমের ইচ্ছায় নানির নাম হয়ে যায় নাতনিরও নাম৷ বাবা মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন ছিলেন মাসিক সওগাত পত্রিকার সম্পাদক। এ পত্রিকাটি নূরজাহান বেগমের জন্মের সাত বছর আগে প্রকাশিত হয়। কলকাতার দোতলা বাড়ির দোতলায় সওগাত অফিস। বাবার কাজে সাহায্য করতে করতেই পত্রিকার সঙ্গে পরিচয় হয় নূরজাহান বেগমের।
১৯৪৭ সালের ২০ জুলাই প্রকাশিত হয় বেগম পত্রিকা৷ সে সময় বাংলা ভাষায় নারীদের জন্য নারীবিষয়ক এই পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন নূরজাহান বেগমের বাবা মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন। পত্রিকাটির প্রথম সম্পাদক ছিলেন কবি সুফিয়া কামাল।
আর কলেজের গণ্ডি পার না হতেই বেগম-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব পান নূরজাহান বেগম৷ তারপর সম্পাদক। নূরজাহান বেগমের মৃত্যুর পর পত্রিকাটির দায়িত্ব নিয়েছেন তার মেয়ে ফ্লোরা নাসরীন খান। বেগম রোকেয়া, কবি কাজী নজরুল ইসলাম, কবি সুফিয়া কামালসহ অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের কাছাকাছি থেকে বড় হয়েছেন নূরজাহান বেগম।
১৯৯৬ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে নন্দিনী সাহিত্য ও পাঠ চক্রের সম্মাননা লাভ করেন। ১৯৯৭ সালে রোকেয়া পদক পান। পেয়েছেন অনন্যা সাহিত্য পুরস্কারও। তাকে মহিলা সমিতি, মহিলা পরিষদ, লেখিকা সংঘ, ঢাকা লেডিস ক্লাব, ঋষিজ, নারী সাংবাদিক কেন্দ্র প্রভৃতি সংগঠন সংবর্ধনা দিয়েছে।
২০১০ সালে পত্রিকা শিল্পে অবদানের জন্য তিনি আন্তর্জাতিক নারী সংগঠন ইনার হুইল ডিস্ট্রিক্ট ৩২৮ সম্মাননা পান। এছাড়া ২০১১ সালে তিনি সাংবাদিকতায় একুশে পদক পান।