আজকের দিন তারিখ ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাবিশ্ব কৃষ্ণাঙ্গদের আন্দোলন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে চীনের খোঁচা

কৃষ্ণাঙ্গদের আন্দোলন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে চীনের খোঁচা


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৫, ২০২০ , ৫:৩২ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাবিশ্ব


দিনের শেষে ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে কৃষ্ণাঙ্গদের আন্দোলনের ঘটনায় চওড়া হাসি ফুটেছে চীনের মুখে। দেশটির সরকারি কর্মকর্তা ও রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় কড়া সমালোচনা চলছে আমেরিকার। যুক্তরাষ্ট্রেরে চলমান আন্দোলনকে হংকং-এর আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা করে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে শঠতার অভিযোগও আনছে চীন। এ খবর দিয়েছে গার্ডিয়ান। খবরে বলা হয়, গত সপ্তাহান্তে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পুলিশের কড়া প্রতিক্রিয়ার কারণে অনেক জায়গায় বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে। কিছু কিছু শহরে অগ্নিকাণ্ড ও লুটতরাজও দেখা গেছে। এছাড়া অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগে পুলিশের সমালোচনা হয়েছে অবারিত। আন্দোলন মূলত শুরু হয়েছিল এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তার হাতে এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের নিহত হওয়ার জের ধরে। অপরদিকে চীন নিয়ন্ত্রিত হংকং-এ এক বছর ধরে টানা গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলন হয়েছে। সেখানেও পুলিশ কড়া বলপ্রয়োগ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সময় মার্কিন প্রশাসন হংকং-এর আন্দোলনকারীদের প্রতি জোরালো গলায় সমর্থন দেয়। বেইজিং সম্প্রতি হংকং-এর ওপর দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা আইন আরোপ করার ঘোষণা দিয়েছে। এরপর আরও সরব হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আর এখন যুক্তরাষ্ট্রে চলছে ভয়াবহ বিক্ষোভ। আর এই সুযোগের সদ্ব্যাবহার করতে এতটুকু দেরি করেনি চীন। সোমবার এক প্রেস কনফারেন্স দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিজিয়ান ঝাও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বর্ণবাদি বৈষম্য বন্ধ ও সংখ্যালঘুদের আইনগত অধিকার সুরক্ষার দাবি জানান। ঝাও বলেন, ‘কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদি বৈষম্য ও পুলিশের নিষ্ঠুরতার ভয়াবহ মাত্রারই প্রতিফলন ঘটায়।’ রোববার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেক মুখপাত্র হুয়া চুনিং টুইটারে পোস্ট করেন জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর আগের শেষ কথা, অর্থাৎ ‘আই ক্যান্ট ব্রেদ’। পাশাপাশি ছিল হংকং-এ চীনের নেওয়া সরকারি ব্যবস্থার সমালোচনা করে আমেরিকান মুখপাত্রের করা টুইট। যুক্তরাষ্ট্রের আন্দোলন নিয়ে টুইটারে বহু মন্তব্য রিটুইট করেছেন ঝাও। এর মধ্যে জাতিসংঘে রাশিয়ার উপ স্থায়ী প্রতিনিধির বক্তব্যও রয়েছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ আনা হয়। তিনি বলেন, ‘দেশে প্রতিবাদকারীদের ভয়ঙ্করভাবে ছত্রভঙ্গ করে যুক্তরাষ্ট্র কেন হংকং-এ শান্তি-শৃঙ্খলা পুনঃস্থাপনে চীনের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে চায় না?’ চীনের জাতীয়তাবাদী দৈনিক গ্লোবাল টাইমসের প্রধান সম্পাদক হু সিজিন লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি একবার বলেছিলেন, হংকং-এ সহিংস বিক্ষোভ দেখার মতো এক দৃশ্য! মার্কিন রাজনীতিকরা এখন সেই দৃশ্য নিজেদের জানালা দিয়েই দেখতে পারবেন।’ গত এক সপ্তাহ ধরে চীনা পত্রিকাটি বহু সম্পাদকীয়তে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতা ও শঠতার অভিযোগ এনেছে। একটি সম্পাদকীয়তে বলা হয়, ‘প্রেসিডেন্ট, আপনি সিক্রেট সার্ভিসের পেছনে লুকাবেন না। যান, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলুন। তাদের সঙ্গে আলোচনা করুন। ঠিক যেভাবে আপনি হংকং-এর দাঙ্গাবাজদের সঙ্গে আলোচনার জন্য বলেছিলেন চীনকে।’ তিনি আরও বলেন, হংকং ও যুক্তরাষ্ট্রের বিক্ষোভগুলোর দু’টিই আইন শৃঙ্খলার ব্যাত্যয় ঘটিয়েছে, শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে। এগুলো ধ্বংসাত্মক ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র যেখানে হংকং-এর বিক্ষোভকে যৌক্তিক মনে করছে, সেখানে নিজ দেশের বিক্ষোভকে অযৌক্তিক ভাবছে। তিনি বলেন, ‘চীন সরকার যুক্তরাষ্ট্রের দাঙ্গার প্রতি কোনো সমর্থন দেখায়নি। আমি আশা করি, যুক্তরাষ্ট্র বেইজিং-এর এই সংযম আমলে নেবে।’