সাগরে মাছ ধরা শুরু, সরগরম উপকূলীয় জেলেপল্লি
পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ২৪, ২০২১ , ১২:৫৩ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়
দিনের শেষে ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরায় দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। যার ফলে ৬৫ দিন পর ফের সাগরে নেমেছেন দেশের সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার জেলেরা। গতকাল শুক্রবার (২৩ জুলাই) দিবাগত রাত থেকেই সাগরে নেমে পড়েছেন অনেক জেলে। কেউ আবার শনিবার (২৪ জুলাই) ভোর থেকে জাল, ফিশিং বোটসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে সাগরে মাছ শিকারে রওনা হয়েছেন। এর আগে, বঙ্গোপসাগরে থাকা মাছগুলোকে সঠিকভাবে বেড়ে উঠার সুযোগ সৃষ্টি করা এবং নির্বিঘ্নে মাছের প্রজনন নিশ্চিত করতে গত ২০ মে থেকে ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করে মৎস্য বিভাগ।
এদিকে, মাছ ধরাকে কেন্দ্রে করেই বেকার জেলেরা ফের কর্মব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। এতে সরগরম হয়ে উঠবে মাছের আড়তগুলো। প্রতিটি নৌকায় চলছে ধোয়া-মোছা ও মেরামতের কাজ। দীর্ঘদিন মাছ ধরা বন্ধ থাকায় কষ্টে থাকা জেলেদের মুখে ফুটে উঠেছে হাসি। ব্যস্ততা দেখা গেছে বরফ কলগুলোতেও। জেলেরা জানান, মাঝারি কিংবা বড় সাইজের ট্রলার নিয়ে সাগরে নামতে খরচ হয়ে থাকে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। এবার ৬৫ দিন বেকার থাকায় পুঁজি শেষ করে ধার-দেনায় জর্জরিত তারা। পাশাপাশি আড়তদার কিংবা দাদনদাররাও খুব একটা ঝুঁকি নিতে রাজি নন।
বরফকল মালিকরা জানিয়েছেন, বছরের পুরোটাই তাদের টেকনিশিয়ানসহ শ্রমিকদের বেকার বসিয়ে টাকা গুনতে হয়। মৌসুমের চার মাসে তারা আয় করে তা পুষিয়ে নিয়ে থাকেন। কিন্তু ভরা মৌসুমে দুই মাসেরও বেশি সময় নিষেধাজ্ঞা থাকায় অনেকেই বরফকল চালু করতে চাচ্ছেন না। জেলা ট্রলার মালিক ও মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, করোনা পরিস্থিতিতে ট্রলারগুলোতে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা মানার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই সুস্থ ও সবল জেলেরাই সাগরে যাবেন।
বরগুনা জেলা মৎস্য অফিসের তথ্যানুযায়ী, জেলার ৬টি উপজেলায় মোট ২৯ হাজার ৫৪১টি জেলে পরিবার রয়েছে। নিবন্ধিত মৎস্যজীবীর সংখ্যা ৪৫,৬২১ জন, নিবন্ধিত যান্ত্রিক নৌযানের সংখ্যা ২০৫টি। দেশের উৎপাদিত মোট ইলিশের ১৩% বরগুনা জেলায় আহরণ করা হয়। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিত কুমার দেব জানান, সাগরে মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইলিশসহ সকল প্রজাতির মাছ ধরার উপর গত ১৯ মে মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। নিষেধাজ্ঞাকালীন জেলেদের খাদ্য সহায়তা হিসেবে সরকারিভাবে চাল দেয়া হয়েছিল। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতসহ জেলে পল্লী ঘুরে দেখা গেছে, চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনার পাশাপাশি ওষুধ কিনতে ব্যস্ত জেলেরা। একেকটি ট্রিপের জন্য ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মালামাল কিনছেন বলে জানান তারা। পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্লাহ বলেন, এ বছর জেলেদের জালে প্রচুর বড় ইলিশ মাছ ধরা পড়বে বলে আমরা আশাবাদি। জেলেদের নিরাপদে মৎস্য শিকার নিশ্চিত করতে যৌথবাহিনী জলদস্যু দমনে কাজ করছে।