আজকের দিন তারিখ ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় শ্রদ্ধেয় মহীয়সীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি

শ্রদ্ধেয় মহীয়সীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ৮, ২০২১ , ২:০০ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


‘বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর
… কোনো কালে একা হয়নি ক’জয়ী
পুরুষের তরবারী
প্রেরণা দিয়াছে, শক্তি দিয়াছে বিজয় লক্ষ্মী নারী।’

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পঙ্ক্তিগুলো বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের বেলায় পুরোপুরি প্রযোজ্য। বাঙালির মুক্তিসংগ্রামে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের রয়েছে অপরিসীম অবদান। বঙ্গমাতা ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য সহধর্মিণী ও বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনে নেপথ্যের কারিগর। তিনি অসাধারণ বুদ্ধি, সাহস, মনোবল, সর্বংসহা ও দূরদর্শিতার অধিকারী ছিলেন। আজ তার ৯১তম জন্মদিন। জন্মদিনে সর্বজন শ্রদ্ধেয় মহীয়সী এ নারীর প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বাংলার মানুষের কাছে শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার নাম। তিনি যেমন বঙ্গবন্ধুর স্কুল জীবনে খেলার সাথী ছিলেন এবং সমগ্র রাজনৈতিক জীবনে নেপথ্যের প্রেরণাদাত্রী হয়ে তাঁর প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকাÐে প্রেরণার উৎস হয়েছিলেন। তেমনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে জাতির পিতার সঙ্গে বুলেটের নির্মম আঘাতে জীবন দিয়েও তিনি বঙ্গবন্ধুর সহযাত্রী হয়েছেন। এক দীর্ঘ আপসহীন লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ধীরে ধীরে শেখ মুজিবুর রহমান থেকে বঙ্গবন্ধুতে পরিণত হওয়া, বঙ্গবন্ধু থেকে একজন জাতির পিতা এবং বিশ^বরেণ্য রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হওয়ার পেছনে যার অবদান অনস্বীকার্য তিনি হলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধু বারবার প্রেপ্তার হয়েছেন, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন কিš‘ বঙ্গমাতা কখনো ভেঙে পড়েননি বরং কারাগারে সাক্ষাৎ করে বঙ্গবন্ধুর মনোবল দৃঢ় রাখতে সহায়তা করেছেন এবং শক্ত হাতে পরিবারের হাল ধরেছেন। তিনি তাঁর পাঁচ সন্তানকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর অনিন্দ্য আদর্শ ও মূল্যবোধে বড় করেছেন। ফজিলাতুন্নেছা সম্বন্ধে একান্ত সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমার স্ত্রীর মতো সাহসী মেয়ে খুব কমই দেখা যায়। আমাকে যখন পিন্ডির ফৌজ বা পুলিশ এসে জেলে নিয়ে যায়, আমার ওপর নানা অত্যাচার করে, আমি কবে ছাড়া পাব বা কবে ফিরে আসব ঠিক থাকে না, তখন কিš‘ সে কখনো ভেঙে পড়েনি। আমার জীবনে দুটি বৃহৎ অবলম্বন। প্রথমটা হলো আত্মবিশ^াস, দ্বিতীয়টা হলো আমার স্ত্রী আকৈশোর গৃহিণী।’ মায়ের স্মৃতিচারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পৃথিবীতে যা কিছু অর্জন হয়, তার পেছনে প্রেরণা দেয়ার কেউ না কেউ থাকেন। তা না হলে কখনো কোনো নেতাই সফলকাম হন না। ঠিক তেমনি আমার বাবার রাজনীতির পেছনে আমার মায়ের বিশাল অবদান রয়েছে। রাজনৈতিকভাবে আমার মা দৃঢ়চেতা ছিলেন।’ প্রাতিষ্ঠানিক কোনো ধরনের শিক্ষা ছাড়াই তিনি ছিলেন সূ² প্রতিভাসম্পন্ন জ্ঞানী, বুদ্ধিদীপ্ত, দায়িত্ববান ও ধৈর্যশীল। স্বাধীনতার পর বীরাঙ্গনাদের উদ্দেশে বঙ্গমাতা বলেন, ‘আমি তোমাদের মা।’ অনেক বীরাঙ্গনাকে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে বিয়ে দিয়ে সামাজিকভাবে মর্যাদাসম্পন্ন জীবনদান করেন তিনি। বঙ্গমাতার আদর্শে আর মননে গড়ে উঠুক এদেশের নতুন প্রজন্মের নারীরাÑ জন্মদিনে এমন প্রত্যাশা করছি।