আজকের দিন তারিখ ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় রেল কর্মচারীদের বেতন প্রদানে বৈষম্য কেন?

রেল কর্মচারীদের বেতন প্রদানে বৈষম্য কেন?


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: অক্টোবর ৪, ২০২০ , ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


ডিজিটালাইজেশনে দেশকে এগিয়ে নিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কাজ করছে। সরকারের সব দপ্তরেও ই-সেবা দেয়ার পাশাপাশি চালু হচ্ছে ই-ফাইল কার্যক্রম। শুধু পিছিয়ে রয়েছে রেল বিভাগ। তারা এখনো এনালগ থেকে গেল বেতন ব্যবস্থায়। এতে অনেকে সুযোগ নিচ্ছে অনিয়ম-দুর্নীতির। গতকাল ভোরের কাগজে রেলে ডিজিটাল সেবা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। জানা গেছে, রেল বিভাগের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তারা বেতন অনলাইন ব্যাংকিংয়ে পেয়ে থাকেন। কিন্তু তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির অবসরপ্রাপ্তরাসহ রেলের কর্মচারীরা এখনো বেতন পান এনালগ পদ্ধতিতে। আর মাসের বেতন হাতে পেতে চলে যায় পরের মাসের অর্ধেকের বেশি সময়। ক্লার্কদের যারা বেতন হাতে এনে পৌঁছান, তারা ১০০, ২০০, ৫০০ টাকা করে রেখে দেয়ার অভিযোগ করেছেন রেলওয়ের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী। দেশে এত ব্যাংক ব্যবস্থার সুবিধা ঘটলেও তারা এখনো পড়ে আছে সেই ব্রিটিশ আমলের নীতিমালায়। এমন অবস্থার অবসান জরুরি। ১৮৯০ সাল থেকেই এমনটা চলে আসছে। কর্মচারীদের বেতনের প্রক্রিয়াটি আধুনিকায়নের চেষ্টা চলছে ক’বছর ধরেই। কিন্তু সেটি এগোয়নি। ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাংককে বেতন স্থানান্তর কার্যক্রম এখনো চালু করা যায়নি। রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, সব কর্মীর বেতন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেয়ার কাজ চলছে। আর হাজিরা ডিজিটাল করার কাজও শুরু হয়েছে। করোনা সংক্রমণের কারণে তা আপাতত স্থগিত রয়েছে। রেল কর্মচারীদের বেতন প্রদানে বৈষম্য না রেখে সম্পূর্ণ অনলাইন পদ্ধতিতে করার জন্য সরকারের পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন মনে করি। রেল উন্নয়নের ক্ষেত্রেও অগ্রগতি খুবই শ্লথ। রেলওয়ের চলমান ৩৬টি প্রকল্পে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। তবে পদ্মায় রেলসংযোগ প্রকল্পটি চলমান আছে। বাকিগুলোর বাস্তবায়ন এখন থমকে গেছে। এসব প্রকল্পের বেশিরভাগই দীর্ঘ সময় ধরে চলমান। চলতি বছরের জুনে কিছু প্রকল্প সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিল। যেহেতু এসবের বেশিরভাগই মাঠপর্যায়ের কাজ, তাই করোনার কারণে শ্রমিকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় এনে এবং সরকারের লকডাউন ঘোষণায় মাঠপর্যায়ের কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। আশা করছি দ্রæত কাজ শুরু হবে। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলো রেলওয়ে। অথচ দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে অবহেলার শিকার হয়ে আসছিল রেলওয়ে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতাসীন হয়ে রেলের দিকে দৃষ্টি ফেরায়। স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় হয়েছে রেলওয়ে। যা দেশবাসীকে খুবই আশান্বিত করেছে, এ কথা বলতেই হয়। তবে উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে শ্লথগতি, সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি অনাকাক্সিক্ষত প্রতিবন্ধকতায় পড়ার খবর আমাদের স্বভাবতই হতাশ করে। আমরা বিশ্বাস করি, পরিকল্পনা অনুযায়ী সময়মতো প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে সত্যিকার অর্থে রেল যোগাযোগে একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে। তার সুফল পড়বে দেশের সার্বিক অগ্রগতিতে। আমরা চাই সব সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে রেল উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে গতি আসুক।