আজকের দিন তারিখ ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
স্পোর্টস যে অজুহাতে মাহমুদউল্লাহকেই ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল

যে অজুহাতে মাহমুদউল্লাহকেই ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ৯, ২০২১ , ২:২১ অপরাহ্ণ | বিভাগ: স্পোর্টস


দিনের শেষে ডেস্ক : প্রত্যয় ছিল সাদা পোশাকের খেলায় ফিরবেন। ঠিকই ফিরেছেন। ফেরাটাও ঐতিহাসিক, গেৌরবোজ্জল, নান্দনিক। ক্রিকেট বিশ্ব মনে রাখবে বহুকাল।
বলছি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কথা। প্রায় দেড় বছর পর দলে সুযোগ পেয়ে দেড়শ’ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস খেলেছে এই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান। বুঝিয়ে দিয়েছেন, ফুরিয়ে যাননি। ক্রিকেট বিশ্বকে বলে দিয়েছেন তাকে টেস্ট থেকে বাদ দেওয়াটা ছিল অন্যায়। স্রেফ খোড়া অজুহাতে তাকে এতদিন খেলা থেকে বিরত রাখা হয়েছিল। গত বছর রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের পর মাহমুদউল্লাহকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়। তখন তাকে শুভ্রবসনের ক্রিকেট থেকে অবসরে যাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছিলেন অনেকে। বিভ্রান্ত কিংবা বিচলিত না হয়ে সেদিন মাহমুদউল্লাহ কি মুচকি হেসেছিলেন? নাটকীয়ভাবে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ফিরেই মহাকাব্যিক ইনিংসে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরি করে উপহাসের জবাব দিলেন বুনো উদযাপনে। হারারেতে শুভ্র পোশাকে ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসে (১৫০*) হাসল মাহমুদউল্লাহর ব্যাট। বাংলাদেশ পৌঁছল স্বস্তির ঠিকানায় (৪৬৮/১০)। তামিম, মুশফিকের ইনজুরি নিয়ে শঙ্কা না থাকলে এবারও হয়তো মাহমুদউল্লাহ থাকতেন মিরপুর একাডেমি মাঠে। তামিম খেললে তো একাদশেই সুযোগ পেতেন না। এখন আসুন মাহমুদউল্লাহকে বাদ দেওয়ার গল্পটা একটু সামনে আনি। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের নাসিম শাহর হ্যাটট্রিক বলে অফ-স্টাম্পের বাইরে শট খেলে আউট হয়েছিলেন। তার মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে এমন উচ্চাভিলাষী শট সেদিন কেউ মেনে নিতে পারেননি। একটা ভুলে ছিটকে দেওয়া হলো তাকে দল থেকে। তারপর থেকে আর তাকে সুযোগ দেওয়া হয়নি।
অভিজ্ঞতার জোরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের পাল ওড়ালেন সেই তিনি। একাদশে জায়গা পাওয়ার পর তাকে অষ্টম ব্যাটসম্যান করায় প্রশ্ন উঠেছে। অথচ, প্রথমদিন যখন ১৩২ রানে দল হারায় ছয় উইকেট, সেই অষ্টম ব্যাটসম্যানই হয়ে ওঠেন ত্রাতা! প্রথমদিন শেষে ৫৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। হাতে শেষ দুই উইকেট। লেজের দুই ব্যাটসম্যান। তাদের নিয়ে তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছা দিবাস্বপ্ন। সঙ্গে থাকা তাসকিন এই ম্যাচের আগে একবারই মাত্র দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পেরেছিলেন। সেই তাসকিন হয়ে গেলেন তার যোগ্য সঙ্গী। আগেরদিন মুমিনুল হক, লিটন দাস যে ভুল করেছেন সেই পথে হাঁটেননি মাহমুদউল্লাহ। তার ফিফটি আসে ১৩৩ বলে। পরের ফিফটি মাত্র ৬২ বলে। ক্যারিয়ারসেরা ১৫০* রান ছুঁতে লেগেছে ২৭৮ বল। ১৭ চারের সঙ্গে একটি ছক্কা।
বাংলাদেশের হয়ে কোনো আট নম্বর ব্যাটসম্যানের পঞ্চম সেঞ্চুরি এটি। এরমধ্যে দুটিই মাহমুদউল্লাহর। মাহমুদউল্লাহ-তাসকিন জুটি ইতিহাসে জায়গা করে নিল। নবম উইকেটে ১৯১ রান যোগ করে বাংলাদেশের তো সেরাই, সব মিলিয়ে এটি নবম উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি। কাল সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর দুহাত উঁচিয়ে হুঙ্কার ছুড়লেন মাহমুদউল্লাহ। যেন সব ক্ষোভ আর অবহেলার জবাব দিলেন। অবশ্য, মাহমুদউল্লাহর প্রত্যাবর্তন সবসময় এমন রাজসিক হয়। ২০১৮ সালেও ব্যর্থতার কারণে নানা সমালোচনায় তাকে দলের বাইরে রাখা হয়। ফিরে নিজেকে চিনিয়েছিলেন নতুন করে। ছয় ইনিংসের ব্যবধানে তিন সেঞ্চুরি করে।