আজকের দিন তারিখ ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ‘বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ’ তৈরির আহ্বান

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ‘বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ’ তৈরির আহ্বান


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২০ , ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে প্রতিবেদক :  বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার ভোর ৪টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৫তম অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। খবর বাসস এসময় কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে বিশ্ববাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টার আবশ্যকতা, ভ্যাকসিনের প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণ এবং জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিতে গৃহীত কার্যক্রম নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, ভূ-রাজনৈতিক বিরোধের মাধ্যমে করোনা মোকাবিলা করতে গিয়ে জাতিসংঘের প্রচেষ্টাকে দুর্বল করবেন না। ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসেই সাফল্য আসে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘকে শতবর্ষ ও এর বেশি সময়ে সঠিক লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ইউএনজিএ-৭৫-কে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন ও সুস্পষ্টভাবে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সকলের কাছে একটি গ্রহণযোগ্য ও বাস্তবসম্মত রোডম্যাপ তৈরি করা উচিত।’ তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই জাতিসংঘকে দুর্বল করে এমন কোনো ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার অনুমোদন দেয়া উচিত নয়। আমরা এটা পূর্ববর্তীদের কাছ থেকে পেয়েছি। এ জন্য তাদের কাছে আমরা ঋণী এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদেরও জাতিসংঘকে একটি সত্যিকার অর্থে সার্বিকভাবে আন্তর্জাতিক কার্যকরী সংস্থায় পরিণত করতে হবে।’

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বলতে চাই যে, আমরা এমন অনেক মুহূর্ত প্রত্যক্ষ করেছি, যা আমাদের মানবসভ্যতার নতুন ইতিহাস গড়ে তুলেছে।চলমান বৈশ্বিক প্রাণঘাতী মহামারি কোভিড-১৯ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই মহামারি আমাদের ২০৩০ এজেন্ডার লক্ষ্য অর্জনকে আরও কঠিন করে দিয়েছে।শেখ হাসিনা বলেন, চলমান মহামারিসহ বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এ ধরনের সংকট মোকাবিলার অক্ষমতা প্রকাশ পেয়েছে। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, এই মহামারি দেখিয়ে দিয়েছে যে উন্নত ও উন্নয়নশীল উভয় দেশকেই পূর্বের যেকোনো সময়ের চেয়ে জাতিসংঘকে এখন বেশি প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের নেতৃত্বে পরিচালিত বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমে অনেক উপকৃত হয়েছে। তাই বাংলাদেশ জাতিসংঘের কাছে ঋণী।শান্তিরক্ষী সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী শান্তি বজায় রাখতে সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে এখন আমাদের দেশের সবচেয়ে বেশি সৈন্য ও পুলিশ সদস্য রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে বিশ্বের সংঘাতপ্রবণ দেশগুলোর শান্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশের ১৫০ শান্তিরক্ষী সদস্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।

জাতিসংঘের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর সাথে একই সময়ে হওয়ায় বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। তিনি আরও বলেন,১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন যে, জাতিসংঘ ভবিষ্যতে মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে। এটা জাতিসংঘ ও বহুপাক্ষিকতার ওপর বাংলাদেশের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রমাণ। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন,অক্লান্ত প্রচেষ্টা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করার জন্য আমি জাতিসংঘের সকল কর্মকর্তা ও সংস্থার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।

এ বছর জাতিসংঘের ৭৫ বছর পূর্তি। এই অধিবেশন বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বহুপাক্ষিকতাবাদের প্রাসঙ্গিকতাকে সামনে নিয়ে আসবে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ আগামী বছরগুলোতে কেমন জাতিসংঘ দেখতে চান সে বিষয়ে তাদের পরিকল্পনা তুলে ধরবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ বিতর্ক এবং উচ্চ পর্যায়ের অধিবেশন ছাড়াও আরো পাঁচটি পার্শ্ব-অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেবেন এবং বক্তৃতা দেবেন। বাসস জানায়, ২৩ শে সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নতুন প্রজন্মের জন্য নিরাপদ-প্রযুক্তি ভিত্তিক বিশ্ব গড়ার উপায় বিষয়ে আলোচনা করতে ‘ডিজিটাল সহযোগিতা সম্পর্কিত উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ: ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য আজকের করণীয়’ শীর্ষক বৈঠকে যোগ দেবেন।

২৪ শে সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিভিএফ সভাপতি হিসাবে জাতিসংঘ মহাসচিব আয়োজিত জলবায়ু কর্মসূচির ওপর উচ্চ পর্যায়ের গোলটেবিল শীর্ষক একটি সভায় যোগ দেবেন। এতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি, বৈশি^ক উষ্ণায়ণকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নিয়স্ত্রিত রাখা, জলবায়ু ভালনারেবল দেশগুলোকে প্রতিশ্রুত তহবিল সরবরাহ এবং জলবায়ু শরণার্থীদের পুনর্বাসনের মতো বিষয়গুলো তুলে ধরবেন।

২৯ শে সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা কোভিড-১৯-এর যুগে এবং এর পরে উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন (এফএফডি) বিষয়ক একটি উচ্চ পর্যায়ের ইভেন্ট শীর্ষক এক বৈঠকে যোগ দেবেন, যেখানে তিনি মহামারীর অর্থনৈতিক প্রভাব কাটাতে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের বর্ণনা দেবেন। পাশাপাশি অভিবাসী কর্মীদের সমস্যা এবং কোভিড-১৯ দ্বারা রেমিট্যান্স হ্রাসের বিষয় উত্থাপন করবেন।

৩০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জীববৈচিত্র শীর্ষসম্মেলনে অংশ নেবেন এবং ১ অক্টোবর তিনি নারী বিষয়ে চতুর্থ বিশ্ব সম্মেলন এবং এডপশন অব দ্য বেইজিং ডিক্লেয়ারেশন এন্ড প্ল্যাটফর্ম ফর একশন (বেইজিং+২৫)-এর ২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ অক্টোবর লিঙ্গ সমতা এবং সকল নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়ন বাস্তবায়ন ত্বরান্বিতকরণ শীর্ষক বৈঠকে নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ-বৈষম্য হ্রাসে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্য তুলে ধরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।