আজকের দিন তারিখ ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ বাসাইলে ‘মসজিদে প্রথম কাতারে বসবেন অফিসার’, এমন নোটিশে তোলপাড়

বাসাইলে ‘মসজিদে প্রথম কাতারে বসবেন অফিসার’, এমন নোটিশে তোলপাড়


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ৫, ২০২০ , ৯:০১ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ


টাঙ্গাইল (বাসাইল) প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের প্রথম কাতারে বসবেন অফিসাররা, অন্য কেউ বসতে পারবেন না। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি জরুরি নোটিশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাদ দিয়ে মসজিদে প্রবেশের দরজাসহ বিভিন্ন জায়গায় সাঁটিয়ে দিয়েছে মসজিদ কমিটি।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তোলপাড় ও স্থানীয় মুসল্লিদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বইছে প্রতিবাদের ঝড়।
মসজিদ কর্তৃপক্ষের নোটিশে বলা হয়েছে– ‘সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বাসাইল উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক নামাজের জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। পাঁচ ওয়াক্ত এবং জুমার নামাজ চিহ্নিত জায়গার বাহিরে পড়া যাবে না এবং জামাত দাঁড়ানোর পূর্ব পর্যন্ত অফিসারগনের সম্মানে সামনের কাতারে না দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হলো। জামাত দাঁড়ানোর সময় সামনের চিহ্নিত খালি জায়গা পূরণ করে দাঁড়াবেন।
মসজিদের বাহিরে/রাস্তায় মসজিদের কার্পেট বিছানো হবে না, পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এ আদেশ কার্যকর থাকবে।’
এ মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামসুন নাহার স্বপ্না ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আল আমিন। ওই মসজিদে নিয়মিত মুসল্লি আকতারুজ্জামান রিপন বলেন, নোটিশটি টাঙানোর পর থেকে আমি ওই মসজিদে যাওয়া বাদ দিয়েছি। ওটা অফিসারদের মসজিদ।
এদিকে মসজিদে গত কয়েক দিন ধরে মুসল্লিদের সামনের কাতার বাদ রেখে বসার জন্য বলে আসছিল মসজিদ কর্তৃপক্ষ। এ মসজিদের সামনের কাতার থেকে মুসল্লিদের উঠিয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে ইতিপূর্বে।
উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের ঈমাম হাফেজ রেজাউল করিম বলেন, গত বৃহস্পতিবার মসজিদ পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশক্রমে এ সংক্রান্ত নোটিশ সাঁটিয়ে দেয়া হয়। এ ছাড়া ৩ জুলাই জুমার নামাজের আগে নোটিশটি পড়ে মুসল্লিদের জানিয়ে দেয়া হয়। সিদ্ধান্তটা পুরোপুরি মসজিদ কমিটির। তাদের নির্দেশনা মোতাবেক আমি শুধু সেটি বাস্তবায়ন করেছি। বাসাইল উপজেলা ঈমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা মজিবর রহমান হেলালী বলেন, মসজিদে যে আগে ঢুকবেন সেই প্রথম কাতারে বসবেন। মসজিদে কোনো বৈষম্য নেই। সবাই সমান। কাউকে উঠিয়েও দেয়া যাবে না। অফিসাররা প্রথম কাতারে বসবে, এটা হাদিস সম্মত নয়। মসজিদ কর্তৃপক্ষের এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া ঠিক হয়নি।
উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন বলেন, কয়েক দিন ধরে মুসল্লিরা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে নামাজ আদায় করছিলেন। যাতে সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজ আদায় করেন এ জন্য নোটিশ দিয়ে বিষয়টি জানানোর জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু মসজিদের ঈমাম আগবাড়িয়ে অফিসারদের বিষয়টি লিখেছেন। সামনের কাতারে অফিসাররা বসবেন এটি আমি তাকে লিখতে বলিনি।
উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামসুন নাহার স্বপ্না বলেন, নোটিশের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। পরে জানতে পেরে নোটিশটি তুলে নেয়া হয়েছে। আমার অনুমতি না নিয়ে কীভাবে নোটিশ দেয়া হলো এ ব্যাপারে রোববার জরুরি মিটিং আহ্বান করা হয়েছে।