আজকের দিন তারিখ ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
অর্থ ও বাণিজ্য বাজারদর: মুরগির বাজারে অসহায় ক্রেতা

বাজারদর: মুরগির বাজারে অসহায় ক্রেতা


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মার্চ ৩০, ২০২১ , ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য


দিনের শেষে প্রতিবেদক : দু’মাস আগেও বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১০০ টাকা ছিল। গত মাসে ছিল ১২০ টাকা কেজি। এখন তা বেড়ে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় উঠেছে। সব ধরনের মুরগির দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো খাদ্যে পুষ্টিমান বজায় রাখার সমস্যায় পড়ছে। পোলট্রি খাতের সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে মুরগির বাজারে ব্রয়লারের অংশ ৬০ শতাংশ। সোনালি ৩০ এবং লেয়ার, দেশিসহ অন্যান্য জাতের মুরগি বিক্রি হয় ১০ শতাংশ। ঢাকা ও চট্টগ্রামে ব্রয়লার ও সোনালি প্রায় সমান বিক্রি হচ্ছে। গত এক মাসে প্রতি কেজিতে ব্রয়লার ৫০ ও সোনালি মুরগির দাম ১০০ টাকা বেড়েছে। শবেবরাত ও রমজানের আগে মুরগির দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। বর্তমানে বাজারে চাল, চিনি, ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম চড়া। এ অবস্থায় মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই এখন বাজার তালিকা থেকে মুরগি বাদ দিচ্ছেন- এমনটা জানালেন মহাখালী বাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. মোহন। তিনি বলেন, আগে যেসব ক্রেতা নিয়মিত মুরগি কিনতেন তাদের অনেককে মুরগি কেনার জন্য ডাকলেও আসছেন না। তারা পরে কেনার কথা বলছেন।
করোনার অভিঘাত : মহামারি করোনা সংক্রমণের শুরুতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর গত এপ্রিলে মুরগি বিক্রি করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। এতে খাবারের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় তখন খামারের মালিকরা ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করেছেন। ওই সময় বাজারে দাম ৮০ টাকা কেজিতে নেমেছিল। হ্যাচারির মালিকরা এক দিনের বাচ্চা বিক্রি করতে না পেরে মেরে ফেলেছিলেন। সারাদেশের খামারিরা বাচ্চা না তুলে খামার বন্ধ রাখেন। এরপর করোনায় অর্থ সংকটে পড়ে অনেকে মূলধন হারিয়েছেন। এখনও ৩০ শতাংশ খামার চালু হয়নি। তাছাড়া শীতের সময়ে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে এই ভয়ে অনেকে খামারে মুরগির বাচ্চা তোলেননি। এতে বাজারে চাহিদার তুলনায় মুরগির উৎপাদন ঘাটতি দেখা দেওয়ায় এখন দাম বাড়ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সোনালি মুরগির দাম। খামারে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর বাজারে তা ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা। গত মাসের শুরুতে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা ছিল। প্রায় একই হারে বেড়ে এখন দেশি মুরগি ৪৮০ থেকে ৫২০ টাকা কেজি। বিক্রেতারা জানান, সরবরাহ ঘাটতি ও ফিডের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত পাঁচ বছরের মধ্যে এবার একসঙ্গে সব ধরনের মুরগির দাম বাড়ল।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্রয়লারের দাম বেড়েছে ৩১ শতাংশ। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের একই সময়ের চেয়ে সোনালি মুরগির ৪৪ শতাংশ ও ব্রয়লার মুরগির ২২ শতাংশ দাম বেড়েছে।
গরু ও মুরগির মাংসের দাম সমান : বাজারে আগের চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। প্রতি কেজি ৫৬০ থেকে ৫৮০ টাকা। গরু মাংসের এই দামের প্রায় সমান দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগির মাংস। এক কেজি সোনালি মুরগি ৩৫০ টাকায় কিনলে প্রকৃত মাংস হয় ৬০০ গ্রাম। এ হিসাবে মাংসের কেজি পড়ে ৫৮৩ টাকা। আর ব্রয়লার মাংসের কেজি ২৮৩ টাকা।
কক বা সোনালি মুরগির মাংস প্রতি কেজি ৬৩০ থেকে ৬৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দর গরুর মাংসের দাম হার মানায়। দেশি মুরগির মাংসের কেজি প্রায় ৮০০ টাকা, যা খাসির মাংসের দাম ছুঁই ছুঁই। জনপ্রিয় একটি অনলাইন শপের ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, আধাকেজি ওজনের একটি সোনালি মুরগির দাম ছিল ৩১৯ টাকা। এতে কেজি পড়ে ৬৩৮ টাকা। যদিও একই শপে গরুর মাংসের দাম ছিল ৫৬৯ টাকা। দেশি মুরগির মাংস ৫৫০ গ্রাম ওজনের দাম ৪৩৯ টাকা।