আজকের দিন তারিখ ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
অর্থ ও বাণিজ্য দেশে চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি নেমে আসতে পারে ২ থেকে ৩ শতাংশে

দেশে চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি নেমে আসতে পারে ২ থেকে ৩ শতাংশে


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ১২, ২০২০ , ৬:৩৫ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য


দিনের শেষে ডেস্ক : মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চলতি অর্থবছরে নেমে দাঁড়াতে পারে ২ থেকে ৩ শতাংশে; যা গত অর্থবছরেই ছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ। শুধু তাই নয়, আগামী অর্থবছরে তা আরো কমে ১ দশমিক ২ থেকে ২ দশমিক ৯ শতাংশ দাঁড়াতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রপ। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গেল ১০ বছরে যখন দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল তখন নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপে এমন প্রাক্কলন করলো বৈশ্বিক ঋণদাতা সংস্থাটি। আজ রোববার বিশ্বব্যাংক ওয়াশিংটন সদরদপ্তর থেকে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের ওপর এ প্রাক্কলন প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জিডিপির প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করে বলছে, এবছর গত ৪০ বছরে মধ্যে এই অঞ্চলের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে দাঁড়াবে। বিশ্বব্যাংকের প্রাক্কলন অনুযায়ী করোনাভাইরাসের প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্য সাতটি দেশের অর্থনীতিতেও বড় রকমের ধস নামতে পারে। এর মধ্যে পাকিস্তান, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তানের জিডিপি বাড়বে না বরং সর্বোচ্চ ১৩ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। নভেল করোনাভাইরাসের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশেই ‘লকডাউন’ অবস্থা চলছে। এর ফলে  প্রতিটি দেশ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রায় বন্ধ, বাণিজ্যিক ব্যবস্থাও ভেঙে পড়ার উপক্রম এবং আর্থিক ও ব্যাংকিং খাতেও আরও বেশি চাপ পড়বে; এসব কারণে তীব্র অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি হবে দেশগুলো। এই দ্রুত পরিবর্তনশীল ও অনিশ্চিত অবস্থা প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে পূর্বাভাস উপস্থাপন করা হয়েছে, ২০২০ সালে আঞ্চলিক বৃদ্ধি ১ দশমিক ৮ থেকে ২ দশমিক ৮ শতাংশের মধ্যে নেমে আসবে, যা ছয়মাস আগে প্রত্যাশিত ছিল ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। বিশ্বব্যাংকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কভিড-১৯ মহামারির কারণে ক্রমবর্ধমান মানবিক ক্ষতি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিণতির মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সরকারকে স্বাস্থ্যখাতে জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের জনগণ, বিশেষ করে দরিদ্রতম ও হতদরিদ্র মানুষকে রক্ষা করতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিবৃতিতে দক্ষিণ এশিয়ার সরকারগুলোকে এখন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকানো এবং দেশগুলোর জনগণকে এ থেকে রক্ষা করার জন্য পদক্ষেপ নেয়াকেই সবচেয়ে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলা হয়েছে। বিশেষত, দরিদ্রতম যারা স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক দুরাবস্থার জন্য আরও খারাপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হন, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টভিগ শ্যাফার এ কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘কোভিড -১৯ সংকট এই জরুরি বার্তা দিচ্ছে যে উদ্ভাবনী পদক্ষেপ নিতে হবে এবং দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিগুলোকে সংকট শেষ হওয়ার পর ‘জাম্প স্টার্ট’ শুরু করতে হবে। এটি করতে ব্যর্থ হলে এ যাবৎ কালের অর্জন বিফল হতে পারে। বিশ্বব্যাংক আরও বলেছে, এই মহামারির কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত হবে। বিশেষ করে, পোশাক খাতে তৈরি পণ্যের জন্য জাতীয় ও বিশ্বব্যাপী চাহিদা হ্রাস, বেকারত্ব সৃষ্টি ও দারিদ্র্যকে আরও গভীর করে তুলবে। শহুরে দরিদ্ররা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং গ্রামীণ অঞ্চলে অতিরিক্ত দরিদ্রের সংখ্যা বেশি হবে। জাতীয় শাটডাউন ব্যক্তিগত ব্যবহারকে প্রভাবিত করবে। মাঝারি মেয়াদে প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধার হওয়ার আশা করা হলেও, কোভিড-১৯ এর অভ্যন্তরীণ প্রাদুর্ভাব ও আর্থিক খাতের দুর্বলতা থেকে ক্ষতির ঝুঁকি রয়েই যাবে। এছাড়াও বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাংক গ্রপ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে এই মহামারী ভাইরাস মোকাবেলা প্রক্রিয়া জোরদার করতে, রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে নজরদারি বাড়াতে, জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষায় এবং বেসরকারি খাতকে গতিশীল রাখতে ব্যাপক, দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। আগামী ১৫ মাসে দেশগুলোতে ১৬ হাজার কোটি ডলার অর্থনৈতিক সহযোগিতা দেয়ারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।