আজকের দিন তারিখ ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় দুদকের মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হোক

দুদকের মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হোক


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ২৬, ২০২১ , ১২:১৮ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


আর্থিক খাতে নানা কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির দায়ে দুদকের মামলাগুলোর অগ্রগতি নেই। আর্থিক খাতের আলোচিত দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের ঘটনায় দায়ের করা ডেসটিনি, হলমার্ক ও বিসমিল্লাহ গ্রæপের মতো চাঞ্চল্যকর মামলাগুলোর ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক ধীরগতি। ডেসটিনি এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসার নামে প্রতারণামূলকভাবে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ২০১২ সালে দুটি মামলা করে দুদক। দেশের ব্যাংকিং খাতে আর্থিক কেলেঙ্কারির আরেকটি নজির হলমার্ক গ্রæপ। ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা শাখাসহ কয়েকটি শাখার মাধ্যমে আড়াই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এই বিজনেস গ্রæপ। এ ঘটনায় ২০১২ সালে ৩৮টি মামলা করে দুদক। ২০১৩ সালে বিসমিল্লাহ গ্রæপ ৫টি ব্যাংক থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। এ ঘটনায় বিসমিল্লাহ গ্রæপের ১৩ জন ও ৫টি ব্যাংকের ৪১ জন ব্যাংকারকে আসামি করে ১২টি মামলা করে দুদক। এর মধ্যে ১০টি মামলায় অভিযোগ গঠন করে বিচারকাজ চলছে। গত দেড় বছর করোনার কারণে বিচারকাজ ঝিমিয়ে পড়ছে। ডেসটিনি, হলমার্ক ও বিসমিল্লাহ গ্রæপের মতো আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার বিচার আইনে বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে শেষ হচ্ছে না। দুদকের তফসিলভুক্ত মামলাগুলো দ্রæত বিচারের লক্ষ্যে ১৯৫৮ সালের ‘দ্য ক্রিমিনাল ল’ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী বিশেষ জজ আদালত স্থাপন করে সরকার। বর্তমানে রাজধানীতে ১২টিসহ সারাদেশে ৩৫টি বিশেষ জজ আদালত রয়েছে। দুদকের মামলার তুলনায় অন্যান্য মামলার সংখ্যা বহুগুণ বেড়ে যাওয়ায় দুর্নীতির বিচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। এছাড়া মামলার প্রতিটি ধাপ চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার যুক্তি দেখিয়ে আসামিপক্ষের সময়ক্ষেপণ এবং বিচারক সংকট ও মামলার চাপসহ নানা কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন। দুদকের আইনজীবীদের দাবি আদালতকে কঠোর হতে হবে। হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ না থাকলে সময় চেয়ে আবেদন জানালে বিচারিক আদালত থেকে নামঞ্জুর করা উচিত। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনে যে কোনো মামলা দায়েরের পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার বিধান রয়েছে। আর বিচার শুরু হওয়ার দিন থেকে পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে বিচারকাজ শেষ করার কথা। কিন্তু দুদকের মামলায় বেশিরভাগই দুই থেকে আড়াই বছর লেগে গেছে তদন্ত শেষ করতে। একইভাবে বিচার শুরু হওয়ার পরও বছরের পর বছর অতিবাহিত হলেও শেষ হচ্ছে না বিচারকাজ। আমরা চাই, দুদক একটি মর্যাদাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুর্নীতি দমনে সুষ্ঠু ভ‚মিকা পালনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করুক। দুদকে দক্ষ ও নিষ্ঠাবান আইনজীবী সংকট রয়েছে। যে কারণে দুদক প্রভাবশালী ও ধনাঢ্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েও কুলিয়ে উঠতে পারছে না, বেশিরভাগ মামলায় আসামিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পারছে না। মামলায় দুদকের সাফল্য তুলনামূলকভাবে কম; মামলা নিষ্পত্তির হারও কম। কাক্সিক্ষত ভ‚মিকা নিশ্চিত করতে দুদকের নিজস্ব আইনজীবী প্যানেলকে শক্তিশালী করা এবং মামলার প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত মাপের আইনজীবী দ্বারা মামলা পরিচালনার কথাও এখন ভাবতে হবে।