আজকের দিন তারিখ ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় ডেঙ্গু নিয়ে হেলাফেলা কেন?

ডেঙ্গু নিয়ে হেলাফেলা কেন?


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১ , ১২:২৬ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


দিন যতই যাচ্ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ ততই প্রকট হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে আক্রান্তের মধ্যে শিশু রোগী বাড়ছে। অনেক শিশু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। অনেকের অবস্থার অবনতি হওয়ায় আইসিইউতেও নিতে হচ্ছে। গতকাল ভোরের কাগজ ঢাকা শিশু হাসপাতালের বরাত দিয়ে জানায়, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬ হাজার ২২২ জন। ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৫ হাজার ১৩২ জন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের। মাসভিত্তিক হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩২ জন, ফেব্রæয়ারিতে ৯ জন, মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে ৩ জন, মে ৪৩ জন, জুনে ২৭২ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। জুলাইয়ে ২ হাজার ২৮৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। মারা যায় ১২ জন। আগস্টে ৭ হাজার ৬৯৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। আর মৃত্যু হয়েছে ৩৪ জনের। সেপ্টেম্বরের ২১ তারিখ পর্যন্ত ৫ হাজার ৮৬৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় আর ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনা সংকটে ডেঙ্গু বিষয়টি অনেকটা ঢিলেঢালা ছিল। ঢিলেঢালা পরিস্থিতি হলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবে অনেক মানুষের প্রাণহানির শঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। এখনই মশক নিধনে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া না হলে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। দুই বছর আগে দেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে ডেঙ্গু রোগে তখন ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, যথাযথ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া অনুসরণ ও জনসচেতনতা সৃষ্টি হলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এখনো ডেঙ্গু জ্বরের কোনো প্রতিষেধক বের করতে পারেনি সরকার। ডেঙ্গু থেকে রেহাই পেতে হলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আইইডিসিআরের তথ্য মতে, সাধারণত জুন-জুলাই থেকে শুরু করে অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ডেঙ্গুর বিস্তার থাকে। সাধারণত মশক নিধন কার্যক্রমের স্থবিরতা, গাইডলাইনের অভাব এবং মানুষের অসচেতনতাই ডেঙ্গুর প্রকোপের জন্য দায়ী। হঠাৎ থেমে থেমে স্বল্পমেয়াদি বৃষ্টিতে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভা খুব বেশি মাত্রায় প্রজনন সক্ষমতা পায়। ফলে এডিস মশার বিস্তারও ঘটে বেশি। এ মশা যত বেশি হবে ডেঙ্গুর হারও তত বাড়বে। উৎস বন্ধ না করতে পারলে ডেঙ্গুর ঝুঁকি থেকেই যাবে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ডেঙ্গু চোখ রাঙালেও, এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে করপোরেশনের তৎপরতা এখনো আগের মতোই। যদিও ঢাকা সিটির দুই মেয়র ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালাচ্ছেন বলে দাবি করছেন। গত বছর এডিস মশা নিয়ে সিটি করপোরেশন তৎপরতা দেখালেও, এ বছর তৎপরতা নামেমাত্র। ফলে ক্রমেই মশার বিস্তার বাড়ছে। এই ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকা শহরে যদি কোনোভাবে করোনা ভাইরাসের সঙ্গে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শুরু হয়, তাহলে কিন্তু মানুষের শেষ জায়গাটিও থাকবে না। আমরা দুই মেয়রের বক্তব্যের সঙ্গে মাঠপর্যায়ের কাজের বাস্তবায়ন দেখতে চাই। কাজেই দেরি না করে মেয়রদ্বয় এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন। প্রথমত, সবখানে মশা নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। বিশেষ করে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এডিস মশা নিধন এবং এডিসের বংশবিস্তার রোধে জোরদার অভিযান পরিচালনা করবেÑ এ প্রত্যাশা নগরবাসীর।