আজকের দিন তারিখ ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস///// গাড়ি ভাঙচুর করা শিক্ষার্থীদের কাজ নয়: প্রধানমন্ত্রী

গাড়ি ভাঙচুর করা শিক্ষার্থীদের কাজ নয়: প্রধানমন্ত্রী


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: ডিসেম্বর ১, ২০২১ , ৪:৪৭ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////


দিনের শেষে ডেস্ক :  চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গাড়ি ভাঙচুর করা শিক্ষার্থীদের কাজ নয়। ক্লাসে ফিরে যাও। যারা দোষী তারা অবশ্যই শাস্তি পাবে। ভবিষ্যতে যারা গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িত থাকবে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। বুধবার (১ ডিসেম্বর) সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি জয়িতা ফাউন্ডেশন এর ভিত্তিপ্রস্তর ও শিশু একাডেমিতে জাতির পিতার ম্যুরাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শিশুদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

লেখাপড়া শিখে আজকের শিশুদের আগামীতে দেশের জন্য কাজ করতে হবে, উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ভবিষ্যতের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আজকের ছেলে-মেয়েদের নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে হবে। রাস্তায় নেমে গাড়ি ভাঙ্গা এটা ছাত্রদের কাজ নয়, এটা কেউ করবেন না। দয়া করে যার যার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যান, লেখাপড়া করেন। আর যারা দোষী অবশ্যই তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে। তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী এ ব্যাপারে অনেক সতর্ক। সঙ্গে সঙ্গেই অপরাধীদের খুঁজে বের করা হয়েছে। তা ছাড়া সবকিছুর ভিডিও ফুটেজও রয়েছে। তাই যে কোন সময় যে কোন অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে তাদের ধরে ফেলা খুব একটা কঠিন কাজ নয়। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করেই সেটা করা হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ভবিষ্যতে এই গাড়ি ভাঙ্গচুর এবং আগুন দেয়ার ঘটনা যারা ঘটাবে তাদেরকে খুঁজে বের করা হবে, শাস্তি দেয়া হবে। কেননা, যে গাড়িতে আগুন দেয়া হচ্ছে সে গাড়িতে যদি কেউ মারা যায় বা আগুনে পোড়ে তার জন্য কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। এ কথাও মাথায় রাখতে হবে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়িতে পর পর পথচারি নিহত হবার ঘটনা তিনি যথাযথভাবে তদন্ত করে দেখারও নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, আমি এটুকুই চাই আমাদের দেশের যে উন্নয়ন আমরা করে দিচ্ছি সেটাকে ধরে রেখে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আজকের শিশুরা আগামী দিনের সোনার বাংলাদেশ গড়ার সৈনিক হবে। সোমবার রাতে রামপুরায় গাড়ি চাপায় শিক্ষার্থী মাইনুদ্দিন ইসলাম নিহত হবার পর এর প্রতিবাদে রাজধানীতে কয়েকটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর আগে ২৪ নভেম্বর নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান ও গাড়ি চাপায় নিহত হয়।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বক্তৃতা করেন। বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর চেয়ারপার্সন লাকী ইনাম এবং জয়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা খান ও বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে জাতির পিতার ম্যুরাল এবং ‘জয়িতা টাওয়ার’এর ওপর দু’টি ভিডিও চিত্রও পরিবেশিত হয়। আজকের শিশুরাই হবে ‘৪১ এর উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের কর্ণধার উল্লেখ করে তাদের লেখাপড়া করা এবং বাবা-মা-অভিভাবকদের আদেশ মান্য করার পাশাপাশি রাস্তাঘাটে চলাচল করতে ট্রাফিক আইন মেনে চলার ও পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটা সকলের জন্য প্রযোজ্য রাস্তাঘাটে চলার সময় সতর্ক থাকতে হবে, ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। রাস্তার যে কোন স্থান থেকে পারাপার হওয়া যাবে না। নির্দিষ্ট পারাপারের স্থান দিয়ে পার হতে হবে। কেননা, একটা চলমান গাড়ি ব্রেক ধরলে তার থামতে সময়ের প্রয়োজন হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, হঠাৎ দৌড় দেবে আর দুর্ঘটনা ঘটবে, দুর্ঘটনা ঘটলেই রাস্তায় লোক নেমে গাড়ি ভাঙ্গা, গাড়িতে আগুন দেয়া, গাড়ি পোড়ানো এটা কি ধরনের কথা। একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে, তখন তাকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে, তার সেবা না করে লাঠিসোটা নিয়ে নেমে পড়ল গাড়ি ভাঙ্গা এবং আগুন দেওয়ার কাজে।

সরকার প্রধান বলেন, আমার এখানে একটা প্রশ্ন এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমগ্র জাতির কাছেই-এই যে দুর্ঘটনার পর আগুন দেয়া শুরু হলো এ গাড়িতে কি নারী-শিশু বা ছাত্র-ছাত্রীরা নেই? ঐ আগুনে যারা পুড়বে, আহত হবে বা মারাও যেতে পারে তার দায়িত্ব কে নিবে? খুব স্বাভাবিক বিষয় হচ্ছে, যারা আগুন দেবে তাদের ওপরই দায় বর্তায়। তাহলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি সংস্থাকে সেভাবেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা গাড়িতে দুর্ঘটনা ঘটে একজন মারা গেল বলে সেখানে আরো ২৫টি গাড়ি ভাঙ্গা এবং আগুন দেয়া এটা কোন ধরনের কথা। শেখ হাসিনা বলেন, তাই আমি বলবো কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আর গাড়ি চালকদেরকেও আমি বলবো তাদেরকেও সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাতে হবে। জনবহুল এই দেশে গাড়ি চালানোর জন্য এ সময় সঠিকভাবে প্রশিক্ষণের ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন এবং তাঁর সরকার উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রেখেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।