আজকের দিন তারিখ ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাবিশ্ব কলেরার ঝুঁকিতে ৪৩ দেশের ১০০ কোটি মানুষ: জাতিসংঘ

কলেরার ঝুঁকিতে ৪৩ দেশের ১০০ কোটি মানুষ: জাতিসংঘ


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ২০, ২০২৩ , ৩:২৭ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাবিশ্ব


দিনের শেষে ডেস্ক : জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ৪৩টি দেশের ১০০ কোটি মানুষ কলেরার ঝুঁকিতে রয়েছে। কলেরার অস্বাভাবিক উচ্চ মৃত্যুর অনুপাতও উদ্বেগজনক অবস্থায় আছে। মালাউই ও নাইজেরিয়ায় এ বছর মৃত্যুর হার তিন শতাংশের বেশি। ইউএন নিউজ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) নতুন এক সতর্কবার্তায় বলেছে, অনেক দেশে কলেরার প্রাদুর্ভাব ছড়াচ্ছে। ক্রমবর্ধমান আক্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইউনিসেফের পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি ইউনিটের প্রধান জেরোম ফাফম্যান জামব্রুনি বলেন, মহামারিটি আমাদের সামনেই দরিদ্রদের হত্যা করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল কলেরা রেসপন্সের ইনসিডেন্ট ম্যানেজার হেনরি গ্রে বলেন, গত বছরের মে মাসের মধ্যে ১৫টি দেশে কলেরা আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। কিন্তু এ বছরের মে মাসের মাঝামাঝি নাগাদ আমরা ২৪টি দেশে কলেরা আক্রান্তের খবর পেয়েছি। বিগত দশকগুলোতে রোগ নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতি সত্ত্বেও আমরা পিছিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছি। কলেরার বিস্তার ও কারণ: মালাউই, মোজাম্বিক, দক্ষিণ আফ্রিকা, তানজানিয়া, জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়েতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায়, বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকা মারাত্মকভাবে ঝুঁকিতে রয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে সাইক্লোন ফ্রেডির ধ্বংসাত্মক তাণ্ডবে মালাউই ও মোজাম্বিকের ৮ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয় এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হয়। এই ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়গুলো কলেরার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এটি একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ যা ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যা কবলিত অঞ্চলে বৃদ্ধি পায়। জলবায়ু পরিবর্তন, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যসেবায় স্বল্প বিনিয়োগ এবং কিছু ক্ষেত্রে বিশ্বব্যপী সশস্ত্র সংঘাতের কারণে এ রোগের বিস্তার ঘটেছে বলে জাতিসংঘের দুই সংস্থা একমত হয়েছে। ভ্যাকসিন সামগ্রিক সমাধান নয়: যদিও কলেরা থেকে রক্ষার জন্য ভ্যাকসিন আছে, তবে চাহিদামতো এর সরবরাহ কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ১ কোটি ৮০ লাখ ডোজ কলেরা টিকার জন্য অনুরোধ করা হলেও মাত্র ৮০ লাখ ডোজের ব্যবস্থা হয়েছে। মি. গ্রে বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে কলেরার ভ্যাকসিন উৎপাদন দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে কলেরা যেভাবে ছড়াচ্ছে, তা অব্যাহত থাকলে আরও বেশি ভ্যাকসিন লাগবে। তাই ভ্যাকসিন রোগ প্রতিরোধের একটি উপায়, কিন্তু সামগ্রিক সমাধান নয়। পানি স্যানিটেশনে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ প্রয়োজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ বিষয়ে বিশ্বকে সজাগ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। ইউনিসেফ বলছে, শুধু দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগই নয়, বিশুদ্ধ পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও ভালো পরিবেশে পানির ব্যবস্থা করতে বিনিয়োগ প্রয়োজন। দ্রুত পদক্ষেপ ও তহবিলের আহ্বান: কলেরার ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবেলায় ডব্লিউএইচও ১২ মাসের একটি কর্মপরিকল্পনা করছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ১৬০ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। সম্মিলিত কলেরা মোকাবেলা পরিকল্পনায় তীব্র ঝুঁকিতে থাকা ৪০টি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এর মধ্যে সমন্বয়, সংক্রমণ নজরদারি ও প্রতিরোধ, টিকাদান, চিকিৎসা ও পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধির মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। জাতিসংঘের দুটি সংস্থা ডব্লিউএইচও ও ইউনিসেফ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। এখন শুধু বৈশ্বিকভাবে সম্মিলিত তহবিল প্রয়োজন।