আজকের দিন তারিখ ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সারাদেশ ওঝাড় ঝাঁড়-ফুকে উপকার না পেয়ে নারীর সংবাদ সম্মেলন

ওঝাড় ঝাঁড়-ফুকে উপকার না পেয়ে নারীর সংবাদ সম্মেলন


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জানুয়ারি ২৮, ২০২৩ , ৬:৩১ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সারাদেশ


বরিশাল প্রতিনিধি : ডায়াবেটিক রোগ নির্মূল করার উদ্দেশ্যে ওঝার কাছে গিয়ে ঝাড়-ফুকে উপকার না পেয়ে শারীরিক, মানসিকসহ অর্থনৈতিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে এক নারী সংবাদ সম্মেলন করেছেন। শনিবার দুপুরে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ জননী সাহান আর বেগম স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি ওঝার কুফরী থেকে মুক্ত হওয়া সহ টাকা ফেরত চেয়েছেন। সেইসাথে তার মতো অন্য কোন পরিবারকে যেন কুফরী দিয়ে ক্ষতি না করতে পারেন সেজন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বরিশাল নগরীর কাশিপুর এলাকার বাসিন্দা মমতাজ বেগম লিখিত বক্তব্যে বলেন, “আমি ২ বছর পূর্বে জানতে পারি কাউনিয়া প্রধান সড়ক সংলগ্ন হেমায়েত মাস্টার নামে এক ওঝা ডায়াবেটিক রোগ নির্মূল করতে পারি। তবে আমি ডায়াবেটিকসহ পলিপাস ও পাইলস রোগেও আক্রান্ত ছিলাম। এসব রোগের কথা হেমায়েত ওঝাকে বললে তিনি বাহিরের চিকিৎসা নিতে বারন করে একেক সময় চা, শরবত ও ডাবের পানি পান করিয়ে চিকিৎসা দিয়েছে। ওঝার নির্দেশে জ্বীন রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়া এমন আমাকে বলা হয়েছে”। তিনি বলেন, গত দুই বছরে দফায় দফায় আমি নগদ ২ লাখ টাকাসহ প্রায় ৬ লাখ টাকার মাছ-মাংস ও ফল দিয়েছি হেমায়েত ওঝার বাড়িতে। তারপরও আমি রোগ থেকে মুক্ত হয়নি এবং সুস্থ হইনি। চিকিৎসার নামে ঝাড়-ফুক দেয়ার সময় প্রায়ই ওঝা আমাকে নামাজ রোজার প্রয়োজন নেই বলতো এবং আমার শরীরে ১ টা ভালো ২ টা খারাপ জ্বীন দিয়ে দেয়ার কথাও বলেছে। যাতে আমিও সকল রোগের চিকিৎসা দিয়ে সারাজীবন ঘরে বসে খেতে পারি। তিনি বলেন, “আমাকে এও বলা হয়েছে কুকুড় বিড়ালের মধ্যে নিজের আত্মা প্রবেশ করে সকল স্থানে আসা-যাওয়া করতে পারবো”। মমতাজ বেগম বলেন, ২০২২ সালে ২৩ অক্টোর সন্ধ্যায় হেমায়েত ওঝা জরুরী ভিত্তিতে তার বাড়িতে ডাকেন এবং সেখানে আমি গিয়ে দেখতে পাই নিজের তৈরি করা এক পুতুলের শরীরে নানান মন্ত্র লিখে সেই পুতুল পুড়িয়ে দেয়। এরপর আমার শরীরে আরও বেশি জ্বালা-পোড়া যন্ত্রনা শুরু করে। কিছুদিন পরে আমাকে সুস্থ করে দিতে নয়তো চিকিৎসার পেছনে নগদ টাকাসহ যে ব্যয় করি তা ফেরত দেয়ার জন্য ওঝাকে বলি। তখন ওই ওঝা আমাকে চিরতরে মুক্তির জন্য ১৫ লাখ টাকা দাবি করে। নয়তো এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে আমি ও আমার পরিবারের লোকজনের ক্ষতির হুমকি দেয় হেমায়েত ওঝা। তিনি বলেন, ৬ মাস বা একবছর আগেও আমি এমন ছিলাম না, দিনে দিনে আমি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছি। কুফরীতে আমিসহ আমার পরিবারের কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হলে দায়ি হবে হেমায়েত ওঝা ও তার পরিবারের লোকজন। আমি বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করছি। এদিকে সংবাদ সম্মেলনের পর এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ নিয়ে মমতাজ বেগম বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার কার্যালয়ে যান। বিকেল পৌনে ৪ টায় তিনি জানান, পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, সেখান থেকে আমাকে উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) এর কার্যালয়ে যেতে বলেছে। বর্তমানে আমি সেখানে রয়েছি। এ ঘটনায় আমি দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্ত হেমায়েত ওঝা জানিয়েছেন, মানত বাবদ কিছু টাকা মমতাজ বেগম তাকে দিয়েছে, তবে এর বাহিরে যে সকল অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়।