আজকের দিন তারিখ ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
/////হাইলাইটস/////, জাতীয় এসপির স্ত্রী হত্যা: জড়িত সন্দেহে সাবেক শিবির ক্যাডার আটক

এসপির স্ত্রী হত্যা: জড়িত সন্দেহে সাবেক শিবির ক্যাডার আটক


পোস্ট করেছেন: admin | প্রকাশিত হয়েছে: জুন ৮, ২০১৬ , ১:৫৬ অপরাহ্ণ | বিভাগ: /////হাইলাইটস/////,জাতীয়


23চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় জড়িত সাবেক শিবির ক্যাডার আবু নছর গুন্নুকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সাবেক এই শিবির ক্যাডার দীর্ঘদিন মধ্যপ্রাচ্যে থাকলেও ৫ বছর আগে তিনি দেশে ফেরেন। ফিরেই হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদের একটি মাজারে খাদেম হিসেবে যোগ দেন তিনি। মিতু হত্যায় আবু নছরের সম্পৃক্ততা আছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। আবু নছর হাটহাজারী উপজেলার মৃত মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে।

বুধবার (৮ জুন) সকালে ফতেয়াবাদ থেকে আবু নছরকে গ্রেপ্তার করা হয়। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য দুপুরে সিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

গত রোববার (৫ জুন) সকালে জিইসি মোড়ে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে খুন করে দুর্বৃত্তরা। হত্যার তিন দিন পর এ ঘটনায় জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।

গ্রেপ্তার আবু নছর হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছিল কি না তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। দেবদাস ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ তবে হত্যায় তার যে সম্পৃক্ততা আছে, এ ব্যাপারে নিশ্চিত তিনি।

সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে থাকত আবু নছর। দেশে ফিরে সে মাজারে খাদেমগিরি শুরু করে। তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে বলেও জানান তিনি।

‘আবু নছরের বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার পশ্চিম ফরহাদাবাদ গ্রামে। সে একসময় ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। পরে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ে’, বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রেপ্তার আবু নছর দুই দফায় মধ্যপ্রাচ্যে ছিল। বিভিন্ন সময় সন্ত্রাসী কাজে অংশ নেয়ার তথ্য আছে। সীতাকুণ্ড থানায় একটি অপহরণহ হত্যা মামলার আসামি সে। শেষ দফায় বিদেশ থেকে ফিরে হাটহাজারী একটি মাজারে আড়াল নেন তিনি।’

আবু নছর মাজারের খাদেম কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঠিক খাদেম নয়, মাজারের রক্ষণাবেক্ষণে আছেন তিনি। জামায়াত-শিবির হলেও আড়াল নেয়ার জন্য আশ্রয় নিয়েছিল সে।’

হত্যায় সরাসরি তিন জন অংশ নিলেও এতে জড়িত আরও অনেকে। হত্যার সময় কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থাকা ও মিশন সম্পন্নের পর মোটরসাইকেলের পেছনে মাইক্রোবাসটির চলে যাওয়াকে রহস্যজনক বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। ওই মাইক্রোবাসে খুনিদের সহযোগীরা অবস্থান করছিল বলেও সন্দেহ করছেন তারা।

দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, “মিতু কখন বের হবেন, মোটরসাইকেলে করে যারা পালাবে তাদের ‘ব্যাক আপের’ জন একটা গ্রুপ ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। বেশ কয়েকজন সমন্বিতভাবে অংশ নিয়েছে হত্যায়।”

সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দুর্বৃত্তরা যখন মিতুকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করছিল, তখন জিইসি মোড়ের দিকে কিছুটা অদূরে দাঁড়িয়ে ছিল একটি কালো মাইক্রোবাস। মিতুর মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘাতকরা মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যাওয়ার ১০ সেকেন্ডের মাথায় ঘটনাস্থলে আসে মাইক্রোবাসটি। পাঁচ সেকেন্ডের মতো ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে আস্তে আস্তে চলা শুরু করে মাইক্রোবাসটি।

পরে গোলপাহাড় মোড়ের দিকে চলে যায় ওই মাইক্রোবাস। কালো কাচের এ মাইক্রোর চালকের আসনের পাশের জানালাটা খোলা ছিল। অন্যসব জানালা বন্ধ ছিল। এ কারণেই গোয়েন্দারা মাইক্রোবাসের যাত্রীর সঙ্গে এ খুনের সম্পৃক্ততার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে।

সোমবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে সিএমপি কমিশনার মো. ইকবাল বাহার জানান, হত্যায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি (চট্টমেট্রো-ল-১২-৯৮০৭) শুলকবহর বড় গ্যারেজ এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এটি দিনভর সেখানে রাস্তার পাশে পড়ে থাকার পর রাতেও কেউ নিতে না আসায় সেটি জব্দ করা হয়।

পরে চেক করে জানা যায়, সেটিই হত্যায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল। খুনিরা ওই এলাকায় মোটরসাইকেল রেখে নিরাপদে পালিয়ে যায়। পুরো এলাকাটি জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত। এজন্য এ ঘটনার সঙ্গে শিবিরের সম্পৃক্ততার বিষয়ে সন্দেহের কথা জানা ইকবাল বাহার।

তিনি বলেন, ‘আমরা আগের হত্যাকাণ্ডের তদন্তে দেখেছি শিবিরের একটি অংশ পর্যায়ক্রমে জেএমবিতে যোগ দেয়। এ কারণেই হত্যাকাণ্ডে জেএমবির সঙ্গে শিবিরও জড়িত ছিল কি না সেটা আমরা খতিয়ে দেখছি।