আজকের দিন তারিখ ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, বৃহস্পতিবার, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
স্পোর্টস এক ম্যাচেই ২ সুপার ওভার, শেষ হাসি পাঞ্জাবের

এক ম্যাচেই ২ সুপার ওভার, শেষ হাসি পাঞ্জাবের


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: অক্টোবর ১৯, ২০২০ , ১১:০৭ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: স্পোর্টস


দিনের শেষে ডেস্ক : পয়েন্টে টেবিলে শীর্ষস্থান ধরে রাখতে নীরব লড়াই চলছে দিল্লি ক্যাপিটালস ও মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের মধ্যে। যে যার শেষ ম্যাচে জয় নিয়ে একে অপরকে টপকে যাচ্ছে। সেই লক্ষ্য নিয়ে কিংস ইলাভেন পাঞ্জাবকে হারাতে রোববার রাতে মাঠে নেমেছিল মুম্বাই। তবে গেইলের আগমনে, প্রথম পর্বে পাঞ্জাব যে আর নেই তা ঢের টের পেয়েছে রোহিত শর্মার দল। রোববার রাতে দুবাই স্টেডিয়ামে নজিরবিহীন এক ঘটনার সাক্ষী হলো ক্রিকেটপ্রেমীরা। মূল ম্যাচে টাই হলো। ম্যাচ গড়ালো সুপার ওভারে। সেটাও টাই! আইপিএলের নতুন নিয়ম অনুযায়ী বিজয়ী দল বের করতে দ্বিতীয়বার সুপার ওভার হলো। রুদ্ধশ্বাসপূর্ণ দুই সুপার ওভারের দ্বিতীয়টিতে জয় পেল লোকেশ রাহুলের কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। এদিন টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই একের পর এক ধাক্কা খেতে হয় মুম্বাইকে। মাত্র ৩৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে মুম্বাই। ৮ বলে ৯ রান করে আর্শদিপ সিংয়ের বলে আউট হয়ে যান অধিনায়ক রোহিত। এরপর সুর্যকুমার যাদব ৪ বল নষ্ট করে শূন্য রানে আউট হন মোহাম্মদ সামির বলে। মুম্বাই শিবিরে আবার আঘাত হানেন আর্শদিপ। ইশান কিশানকে ৭ রানে ফেরান তিনি। এমন পরিস্থিতিতে মুম্বাইয়ের ত্রাতা হয়ে উঠে কুইন্টন ডি কক এবং হার্দিক পান্ডিয়ার জুটি। উইকেট বাঁচিয়ে খেলে ৪৩ বলে ৫৩ রান করেন ডি কক। হার্দিক পান্ডিয়াও ৩০ বলে করেন ৩৪ রান। শেষ দিকে ১২ বলে অপরাজিত ৩৪ রানের ইনিংস খেলে রানের গতি বাড়িয়ে দেন। তার দেখা দেখি নাথান কাউল্টার নেইলও ১২ বল খেলে ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন। এই দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যানের ঝড়ো ইনিংস শেষে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান করে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ শামি এবং আর্শদিপ সিং। ক্রিস জর্ডান এবং রবি বিষ্ণোই নেন ১টি করে উইকেট। ১৭৭ রান তাড়া করতে নেমে অধিনায়ক লোকেশ রাহুলের দুর্দান্ত ব্যাটিং উপভোগ করে ক্রিকেটপ্রেমীরা। একে একে সতীর্থদের সাজঘরে ফিরে যাওয়া দেখলেও উইকেটের হাল ধরে রেখে ব্যাট চালিয়ে যেতে থাকেন রাহুল।
শুরুতে বুমরার শিকার হন মায়াঙ্ক আগার ওয়াল (১০ বলে ১১ রান)। চাহারের বলে আউট হওয়ার আগে ক্রিস গেইল ২১ বলে ১ চার আর ২ ছক্কায় ২৪ রান করেন। সমান রান করে বুমরার শিকার হন নিকোলাস পুরান। বরাবরের মতো রোববারও সেই একই ম্যাক্সওয়েলকে দেখা গেছে। চাহারের বলে শুন্যরানে উইকেট দিয়ে আসেন তিনি। এরপর একপ্রান্ত ধরে রাখা অধিনায়ক রাহুল বোল্ড হয়ে যান বুমরার বলে। আউট হওয়ার আগে ৫১ বলে ৭ চার আর ৩ ছক্কায় ৭৭ রান করেন তিনি। এমন পরিস্থিতিতে জন্য জয়ের জন্য দরকার ১৫ বলে ২৪ রান। এরপর শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ৯ রান। উইকেটে ছিলেন দীপক হুদা আর ক্রিস জর্ডান। কিন্তু ট্রেন্ট বোল্টের করা শেষ ওভারে প্রথম ৫ বলে ৭ রান নিতে পারে হুদা- জর্ডান জুটি। শেষ বলে দরকার ছিল ২ রান। বাউন্ডারি না হাঁকাতে পেরে ২ রান নিতে দৌড় দেয় ব্যাটসম্যানরা। এক রান নিতে পারলেও দ্বিতীয় রানের সময় রানআউট হয়ে যান জর্ডান। ফলে টাই হয় ম্যাচ, গড়ায় সুপার ওভারে।
প্রথম সুপার ওভারে জয়ের দায়িত্ব নেন নিকোলাস পুরান ও অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। জয় রুখতে জাসপ্রিত বুমরাকে পাঠান রোহিত। ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট হয়ে যান পুরান। শেষ পর্যন্ত সুপার ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৫ রান করতে পারে পাঞ্জাব। মাত্র ৬ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নামেন মুম্বাইয়ের দুই হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান কুইন্টন ডি কক আর অধিনায়ক রোহিত শর্মা। মোহাম্মদ শামির হাতে বল তুলে দেন রাহুল। শেষ বলে ডি কক আউট হলে ৫ রানে থামে মুম্বাই। অর্থাৎ সুপার ওভারও টাই! জয়-পরাজয় নির্ধারণে দ্বিতীয় সুপার ওভারে গড়ায় ম্যাচ, য আইপিএলে নজিরবিহীন ইতিহাস। এবার মুম্বাই আগে ব্যাটিংয়ে নামে। কায়রন পোলার্ড আর হার্দিক পান্ডিয়ার ওপর দায়িত্ব পড়ে। লোকেশ রাহুলের এবারের ভরসা ক্রিস জর্ডান। ওই ওভারে ১১ রান তুলতে পারে মুম্বাই। প্রথম সুপার ওভারে ৫ রান করা পাঞ্জাব এবার আর ভুল করেনি। টি-টোয়েন্টির রাজা ক্রিস গেইলকে ওপেনিংয়ে পাঠায় রাহুল। মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে সঙ্গে নিয়ে ট্রেন্ট বোল্টকে মোকাবেলা করেন গেইল। বোল্টের প্রথম বলটি লং অনের ওপর দিয়ে বিশাল ছক্কা হাঁকান গেইল। তৃতীয় বলে স্ট্রাইক পাওয়া আগারওয়াল টানা দুই বাউন্ডারি হাঁকালে দীর্ঘসময় ধরে উত্তেজনার ম্যাচ নিজেদের করে নেয় পাঞ্জাব। নজিরবিহীন এক ইতিহাসের দিনে শেষ হাসি ফুটে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের মুখে। এ নিয়ে ৯ ম্যাচে তৃতীয় জয় নিয়ে পয়েন্ট তালিকার ছয় নম্বরে উঠে এসেছে প্রীতি জিনতার পাঞ্জাব। সমান ম্যাচে ৬ জয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস দিল্লিকে টপকে শীর্ষে উঠতে পারেনি।