আজকের দিন তারিখ ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় অবৈধ এমএলএম ব্যবসা বন্ধে আইনের প্রয়োগ দরকার

অবৈধ এমএলএম ব্যবসা বন্ধে আইনের প্রয়োগ দরকার


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ৪, ২০২১ , ২:২২ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


আইনের কার্যকারিতা না থাকায় অবৈধ মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসা চলছে। মানি লন্ডারিং, অর্থ আত্মসাৎসহ নানামুখী প্রতারণার অভিযোগে নিষিদ্ধ কোম্পানিগুলোর তৎপরতা থেমে নেই। অবৈধভাবে বিক্রি করছে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য। এমনকি অনুমোদনহীন ওষুধ বিক্রির অভিযোগ রয়েছে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। প্রণয়নের ৮ বছর পরও ‘মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩’ কার্যকর না হওয়া দুঃখজনক। ডেসটিনি গ্রæপের অনিয়ম-দুর্নীতি ও প্রতারণার ফাঁদ ধরা পড়ার পর সরকার বিষয়টি প্রথম আমলে নেয় ২০১২ সালে। এমএলএম পদ্ধতির ব্যবসায়ের মাধ্যমে এক যুগ ধরে (২০০০-১২) ডেসটিনি কোম্পানি মানুষের কাছ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি প্রতারণা করে নিয়েছে। এ ঘটনায় দুদকের মামলা দায়েরের পর ৯ বছর অতিবাহিত হলেও বিষয়টি এখনো নিষ্পত্তিহীন। এ অবস্থায় অর্থ ফেরত পেতে রায়ের অপেক্ষায় রয়েছেন ডেসটিনির প্রায় ৪৫ লাখ গ্রাহক। ডেসটিনি, যুবক, ইউনিপেটু, এসপিসিসহ শতাধিক কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবসার নামে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ ওঠার পর ২০১৩ সালের অক্টোবরে এমএলএম ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইন প্রণয়ন করা হয়। এতে বলা হয়, লাইসেন্স ছাড়া বহু ধাপ বিপণন কার্যক্রম চালানো যাবে না; যেসব প্রতিষ্ঠানের এ কার্যক্রম রয়েছে, আইনটি পাসের পর ৯০ দিনের মধ্যে তাদের লাইসেন্স নিতে হবে। লাইসেন্স ছাড়া কেউ এ কার্যক্রম চালালে তার ১০ বছর পর্যন্ত কারাদÐ ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানা হবে। এ আইন অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া এমএলএম ব্যবসা করা যায় না। সরকারের অনুমোদন ছাড়া লাইসেন্স হস্তান্তর করতেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আইন পাসের পরও নতুন নতুন নামে এমএলএম ব্যবসা পরিচালনা করছে অনেকে। এতে প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনাও বাড়ছে। জানা যায়, ২০০২ সালে ডেসটিনিসহ দেশে এমএলএম কোম্পানি ছিল ১৬টি। ২০০৬ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ২৪টিতে। বর্তমানে দেশে ২ শতাধিক এমএলএম কোম্পানি কাজ করছে। কোম্পানিগুলো প্রতারণার ধরন পাল্টে ই-কমার্স, ই-বিজনেস ও ডিরেক্ট টেলিমার্কেটিং, ক্যাশলেস সোসাইটি প্রভৃতি নামে বিভিন্ন ‘এমএলএম কোম্পানি’ গড়ে উঠেছে। কোনো কোনো কোম্পানি ফুড সাপ্লিমেন্ট, প্রসাধনসামগ্রী ও হারবাল ওষুধ বিপণনের নামে এমএলএম কার্যক্রম চালাচ্ছে। এসব পণ্যের মাধ্যমে কোম্পানিগুলো সাধারণ মানুষ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) কোম্পানিগুলো ব্যবসার নামে সাধারণ মানুষ তথা গ্রাহকদের কাছ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আগেও হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতারণার অভিযোগে সরকার এমএলএম বাণিজ্য নিষিদ্ধ করেছিল। আশা করা হয়েছিল এ পদক্ষেপে কাজ হবে। মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে সর্বস্ব লুট করার অনৈতিক ব্যবসা বন্ধ হবে। এগুলো দেখার দায়িত্ব যাদের তাদের ভ‚মিকা কী? প্রশাসনের নীরবতায় প্রতারিত হচ্ছে বিশেষভাবে নিম্নবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষ। আমরা চাই, প্রতারণা বন্ধে আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করবে সরকার।