আজকের দিন তারিখ ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
জাতীয় রমেকে এক সপ্তাহে ১৯ শিশুর মৃত্যু

রমেকে এক সপ্তাহে ১৯ শিশুর মৃত্যু


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জানুয়ারি ২৯, ২০২১ , ১২:০৬ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়


রংপুর প্রতিনিধি : রংপুর বিভাগে এক সপ্তাহ ধরে চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। তীব্র শীতের কারণে বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব। ডায়ারিয়া , শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, অ্যাজমাসহ (এআর আই) অন্যান্য ঠাণ্ডাজনিত রোগে ১৯ শিশু মারা গেছে।
রমেক সূত্রে জানা গেছে, গত সাতদিনে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ১ হাজার ৬২২ শিশু চিকিৎসাধীন ছিল। রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ মো. মোস্তাফিজার রহমান বলেন, মৃদু শৈত্যপ্রবাহ আরো দু-তিনদিন স্থায়ী হতে পারে। মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলাকালীন রংপুর জেলায় সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা হচ্ছে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনে প্রায় সূর্যের দেখা পাওয়া না যাওয়ায় ঠাণ্ডা বেশি অনুভূত হয়েছে। এছাড়া তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলেও বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকলে ঠাণ্ডা অনুভূত হবে। শৈত্যপ্রবাহ চলাকালীন বিভাগে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গতকাল রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেডিসিন এবং শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেড়েছে। এছাড়া শিশু ওয়ার্ডে শয্যার চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় একটি শয্যায় একাধিক শিশু রাখতে হচ্ছে। হাসপাতালের তৃতীয় তলায় অবস্থিত ৯ নং শিশু ওয়ার্ডে শয্যা সংখ্যা ৩২টি। রোগী আছে ৭৫ জন। এছাড়া ১০ নং শিশু ওয়ার্ডে বর্তমানে ৪০ বেডের বিপরীতে শিশু আছে ৪৬৭ জন। এছাড়া ওই ওয়ার্ডের নবজাতকের নিবিড় পর্যবেক্ষণ (আইসিইউ) কেন্দ্রে রোগী আছে ৩৭ জন। এছাড়া হাসপাতালের বহির্বিভাগে শিশুর ঠাণ্ডাজনিত রোগের চিকিৎসা নিতে এসেছেন অনেক অভিভাবক।
রমেক হাসপাতালের নার্সিং শাখার শিশু বিভাগের এক সপ্তাহের রোগীর প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২১-২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত শিশু ওয়ার্ডে (৯, ১০) মোট ১৯ জন শিশু চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। এ সময় পুরনো ও নতুন মিলে চিকিৎসাধীন ছিল ১ হাজার ৬২২ জন শিশু। এর মধ্যে ২১ জানুয়ারি মারা গেছে ছয়জন, ২২ জানুয়ারি তিনজন, ২৩ জানুয়ারি দুজন, ২৪ জানুয়ারি তিনজন, ২৫ জানুয়ারি একজন, ২৬ জানুয়ারি একজন ও ২৭ জানুয়ারি মারা গেছে তিন শিশু। চিকিৎসাধীন শিশুমৃত্যুর জন্য যেসব রোগ উল্লেখ করা হয়েছে, এর মধ্যে পিএনএ (পেরেন্টাল অ্যাসপায়সিয়া) বা অক্সিজেনের ঘাটতি, জন্ডিস, ওজন কম, ডায়রিয়া অন্যতম।
রমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. আব্দুল মোকাদ্দেম বলেন, ঠাণ্ডার কারণে শিশু ওয়ার্ডগুলোয় রোগীর চাপ বেশি। তবে শিশুমৃত্যুর জন্য ঠাণ্ডা নয়, নির্দিষ্ট রোগ দায়ী।
রংপুর জেলার সিভিল সার্জন হিরম্ব কুমার রায় বলেন, এ বৈরী আবহাওয়ায় শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেয়া প্রয়োজন। শিশুদের ঠাণ্ডা যাতে না লাগে তা দেখতে হবে। পাশাপাশি শিশুরা অপুষ্টিতেও যেন না ভোগে, এজন্য মাকে সতর্ক থাকতে হবে। ঠাণ্ডার কারণে শিশুদের যেকোনো রোগ জটিল আকার ধারণ করতে পারে। এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। কম ওজনের শিশুরা ঠাণ্ডায় বেশি আক্রান্ত হয়।