আজকের দিন তারিখ ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় ভোগান্তি যেন ঈদ যাত্রার সঙ্গী

ভোগান্তি যেন ঈদ যাত্রার সঙ্গী


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জুলাই ১৯, ২০২১ , ১:৪৩ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


দেশের কোনো পথই ঘরমুখী মানুষের ঈদযাত্রার জন্য স্বস্তিদায়ক নয়। সড়কপথ, নৌপথ, রেলপথ ঈদের আগে কোথাও স্বস্তির কোনো চিত্র পরিলক্ষিত হয় না। এ সময়ে বিভিন্ন পথে সড়ক দুর্ঘটনাও বেড়ে যায়। এবারো ব্যতিক্রম নয়। গতকাল রবিবার সকালে রংপুরের মিঠাপুকুরে ঈদযাত্রায় দুই যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৬ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন দুই বাসের অন্তত ৫০ যাত্রী। আর একদিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদের আগে সড়কে মৃত্যু কোনোভাবেই কাম্য নয়। গতকালের ভোরের কাগজে ছাপা হয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনাল, লঞ্চ টার্মিনাল, রেলস্টেশনের অবস্থা নিয়ে সরেজমিন প্রতিবেদন। সেখানে পাওয়া গেছে সেই চিরচেনা চিত্রÑ সর্বত্র ঘরমুখো মানুষের ভিড়। অন্যদিকে রাজধানীতে আসছে কুরবানির পশুবাহী ট্রাক। ফলে ঢাকার সীমানাতেই সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। গতকালও বাড়িমুখো যাত্রীদের ভোগান্তির শুরুটা হয়েছে এখান থেকে আর মহাসড়কে গিয়ে পড়েছে যানজটে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাজীপুরে এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে তীব্র যানজটের কারণে যাত্রীদের নাকাল দশার খবর দেখছি। ঈদে সবচেয়ে বেশি যাত্রী পরিবহন হয় সড়কপথে এবং বিগত সময়ে সড়কপথেই ভোগান্তি বেশি লক্ষ করা গেছে। যানবাহন স্বল্পতা, সিডিউল ঠিক না থাকা, মহাসড়কের বেহালদশা, মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট, যানবাহন দুর্ঘটনায় পতিত হওয়া ইত্যাদি অনেকেরই উৎসবের আনন্দকে বিষাদের ছায়ায় ঢেকেছে। অবশ্য বছর দুই-তিন ধরে পরিস্থিতির বেশ উন্নতিই দেখছি আমরা। এবার দীর্ঘ যাত্রার শুরুতে খোদ ঢাকা শহরেই তীব্র যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকা পড়েন যাত্রীরা। ঈদের সময় বাড়তি চাপে সময়সূচি কিছুটা হেরফের হওয়া স্বাভাবিক কিন্তু তা যেন যাত্রীদের সহ্যসীমার বাইরে না যায় সেদিকে কর্তৃপক্ষের বিশেষ দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। নৌপথে আনফিট যান রুটে নামানো, লঞ্চ-স্টিমারে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই নৌদুর্ঘটনা হয়ে থাকে। নৌপথে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ঠেকানো, সময়সূচি ঠিক রাখা এবং টার্মিনাল ও নৌপথের নিরাপত্তায় বিআইডবিøউটিএ, র‌্যাব-পুলিশ, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড সবার সমন্বিত ভ‚মিকা প্রয়োজন। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের জীবনে এমনিতেই দুর্ভোগের অন্ত নেই। উৎসব-পার্বণে এ দুর্ভোগ যেন শতগুণ বেড়ে যায়। এর ফলে উৎসবের রং ফিকে হয়ে যায়। অনেক জায়গায় সড়ক-মহাসড়কের পাশে কুরবানির পশুর হাট বসে। ফলে এই হাটগুলোও যানজটের কারণ হয়ে দেখা দিচ্ছে। পথের দুর্ভোগ-দুর্ঘটনায় কারো ঈদের আনন্দে যেন বিষাদের কালিমা না পড়ে এটাই আমাদের চাওয়া। এর জন্য সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তরগুলো, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পরিবহন সংগঠন ও সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল ভ‚মিকা প্রত্যাশা করছি আমরা। আর যাত্রীদেরও নিজেদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতন ও সাবধান থাকা দরকার। সর্বোপরি, ঈদযাত্রা নির্বিঘœ এবং নিরাপদ করার জন্য সর্বোচ্চ সামর্থ্য ও আন্তরিকতা নিয়ে সচেষ্ট থাকতে হবে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের।