আজকের দিন তারিখ ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শনিবার, ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
অর্থ ও বাণিজ্য বেড়েছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে প্রয়োজনীয়তা

বেড়েছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে প্রয়োজনীয়তা


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ৮, ২০২০ , ৬:২২ পূর্বাহ্ণ | বিভাগ: অর্থ ও বাণিজ্য


দিনের শেষে প্রতিবেদক : করোনা ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে মানুষকে ঘরে থাকতে হচ্ছে। তবে অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তার কারণে লেনদেন করতে হবে। বিশেষ করে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে মানুষকে লেনদেন করতে হচ্ছে। এজন্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ব্যবহারও বাড়ছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ফলে মানুষের লেনদেন অনেক সহজ হয়েছে। আবার ক্ষেত্র বিশেষে বিভিন্ন অফারের কারণে নগদ লেনদেনের চেয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনে কিছুটা সুবিধাও পাচ্ছেন গ্রাহকরা। এদিকে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি এবং খরচ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসগুলোকে (এমএফএস) ১০০০ টাকা ক্যাশ আউটে কোনো চার্জ না নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনাটি মানছে না বিকাশ। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি হাজার টাকা ক্যাশ আউট চার্জ না নেওয়ার বিষয়ে গত ১৯ মার্চ একটি নির্দেশনা দিয়েছে। নির্দেশনাটির (গ) ধারায় এমএফএস সেবাগুলোকে বলা হয়েছে, প্রতি হাজার টাকা ক্যাশ আউটে কোনো চার্জ না নেওয়ার কথা। অথচ বিকাশ গ্রাহকদের ক্যাশ আউট চার্জ নিচ্ছে। বিকাশ মাসে একবার গ্রাহকদের ক্যাশ আউট চার্জের টাকা ক্যাশ ব্যাক দেওয়ার কথা বলে এসএমএস দিচ্ছে। প্রতি হাজার টাকা ক্যাশ আউট চার্জ নেওয়ার বিষয়টি বিকাশের পাঠানো এসএমএসের মাধ্যমে স্বীকারও করেছে প্রতিষ্ঠানটি। গ্রাহকদের দেওয়া একটি এসএমএসে বিকাশ বলছে, ‘আপনি মাসে একবার বিকাশ অ্যাপ কিংবা *২৪৭# ডায়াল করে ৫০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশ আউট (মাসের প্রথম এই লেনদেনের ক্ষেত্রে) অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া করতে পারবেন। তবে ক্যাশ আউট করার সময় চার্জ কাটা হবে। এ ক্ষেত্রে আপনার কেটে নেওয়া ক্যাশ আউট চার্জটি পরের দিন আপনার একাউন্ট এ ফেরত চলে যাবে। এক মাসে আপনি একবারই এই ক্যাশ আউট চার্জটি ফেরত পাবেন।” বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২০ সালের ফেব্রূয়ারি শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ১৮ লাখ ৫৭ হাজার। যা তার আগের মাস জানুয়ারিতে ছিল ৮ কোটি ৯ লাখ ১৬ হাজার। অর্থাৎ এক মাসে গ্রাহক বেড়েছে ১ দশমিক ১৬ শতাংশ। গত ফেব্রূয়ারিতে মোট ২২ কোটি ৬১ লাখ ৯ হাজার ৪০৫টি লেনদেনের মাধ্যমে ৪১ হাজার ৩৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪২৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। ফেব্রূয়ারির হিসাবে দেখা গেছে, দেশে সক্রিয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হিসাবধারী রয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ ৮৭ হাজার। আর মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা ৯ লাখ ৮৬ হাজার জন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আলোচিত মাসজুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোতে ফেব্রয়ারিতে জমা পড়েছে ১৪ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। উত্তোলন করেছে ১৩ হাজার ৭০৬ কোটি টাকা। রেমিট্যান্স এসেছে ২৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ৯ হাজার ৭৯৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ হয়েছে ১ হাজার ৮৭ কোটি টাকা। বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৪৪১ কোটি টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৫৮১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। সরকারি পরিশোধ ২৭৫ কোটি টাকা। এছাড়া অন্যান্য হিসাবে লেনদেন হয়েছে ৭৮০ কোটি টাকা। ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমএফএস লেনদেনের সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী, একজন গ্রাহক তার অ্যাকাউন্টে দিনে পাঁচবারে ৩০ হাজার টাকা ক্যাশ ইন বা জমা করতে পারবেন। আর মাসে ২৫ বারে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা ক্যাশ ইন করা যায়। আগে প্রতিদিন দুই বারে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা জমা করতে পারতেন একজন গ্রাহক। আর মাসে ২০ বারে এক লাখ টাকা ক্যাশ ইন করতে পারতেন গ্রাহক। বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) সর্বশেষ তথ্য বলছে, ফেব্রুয়ারিতে বেসরকারি এনসিসি ব্যাংক তাদের এমএফএস সেবা বন্ধ করেছে। ফলে বর্তমানে দেশে মোট ১৫টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে জড়িত আছে।