আজকের দিন তারিখ ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
জাতীয় বৃষ্টিতে ভিজে বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের মিছিল

বৃষ্টিতে ভিজে বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের মিছিল


পোস্ট করেছেন: dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ২, ২০২৪ , ২:২৯ অপরাহ্ণ | বিভাগ: জাতীয়


দিনের শেষে প্রতিবেদক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা স্বেচ্ছায় না দেওয়ার কথা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ছয় সমন্বয়ক। বেলা ১১টা ২০ মিনিটে সাংবাদিকদের পাঠানো ৬ সমন্বয়কের স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, আন্দোলন ও নেতৃত্বকে ছত্রভঙ্গ করতেই ১৯ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের গুম, গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও হয়রানি করা হচ্ছে। এতে আরও বলা হয়েছে, গত ২৬ জুলাই ঢাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে ডিবি পুলিশ জোরপূর্বক মিন্টো রোডের ডিবি অফিসে তুলে নিয়ে আসে। মো. নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ছিল। বিবৃতিতে বলা হয়, ২৭ জুলাই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে সাইন্সল্যাব থেকে জোরপূর্বক ডিবি অফিসে তুলে নিয়ে আসা হয়। ২৮ জুলাই সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুমকে ভোররাতে বাসা ভেঙে জোরপূর্বক ডিবি অফিসে নিয়ে আসা হয়। মূলত আন্দোলন ও নেতৃত্বকে ছত্রভঙ্গ করতেই ১৯ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের গুম, গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও হয়রানি করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় ‘নিরাপত্তা’র নামে ছয় সমন্বয়ককে সাতদিন ধরে ডিবি হেফাজতে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডিবি প্রধান নিরাপত্তার কথা বললেও আমাদেরকে আন্দোলন থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার জন্যই ডিবি হেফাজতে রাখা হয়েছিল। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা গুম, গ্রেপ্তার ও নির্যাতন থেকে নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা চেয়েছিলাম; আমরা আমাদের মত প্রকাশের অধিকারের নিশ্চয়তা চেয়েছিলাম। কিন্তু অসাংবিধানিক ও আইনবহির্ভূতভাবে আমাদেরকে ডিবি হেফাজতে আটকে রাখা হয়। প্রথমে নিরাপত্তার কথা বললেও পরে আদালতের কথা বলা হয়। আদালতের আদেশ ছাড়া নাকি আমাদের ছাড়া যাবে না। ছয় সমন্বয়ক বলেন, যারা নিরস্ত্র ছাত্র-নাগরিককে গুলি করে হত্যা করে তাদের হেফাজতে কেউই নিরাপদে থাকতে পারে না। সরকারের কাছে আমরা এই প্রহসনের নিরাপত্তা চাই না। আমরা আমাদের ভাই বোনদের খুনের বিচার চাই। আন্দোলন প্রত্যাহারের বিষয়ে তারা বলেন, আন্দোলন প্রত্যাহার করে ডিবি অফিস থেকে প্রচারিত ছয় সমন্বয়ককের ভিডিও স্টেটমেন্টটি আমরা স্বেচ্ছায় দেইনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সিদ্ধান্ত ডিবি অফিস থেকে আসতে পারে না। সারাদেশের সকল সমন্বয়ক ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ব্যতীত কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গৃহীত হবে না। ডিবি অফিসে আমাদের জোর করে খাবার টেবিলে বসিয়ে ভিডিও করা হয়। আমাদের ছেড়ে দেবার আশ্বাস দিয়ে পরিবারকে ডেকে ১৩ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয় এবং মিডিয়ায় মিথ্যা স্টেটমেন্ট দেওয়ানো হয়। আমাদের শিক্ষকরা দেখা করতে আসলে, দেখা করতে দেওয়া হয়নি। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অন্যায়ভাবে সমন্বয়কদের আটক, সারা দেশে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে গত ৩০ জুলাই রাত থেকে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের ডিবি অফিসে আটক অবস্থায় অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। পরবর্তীতে সে খবর জানামাত্র সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুলাহ ও নুসরাত তাবাসসুমও অনশন শুরু করেন। অনশনের কথা পরিবার ও মিডিয়া থেকে গোপন করা হয়। প্রায় ৩২ ঘণ্টারও অধিক সময় অনশনের পরে ডিবি প্রধান ছয় সমন্বয়ককে মুক্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিলে অনশন ভাঙা হয়। আমাদেরকে ১ অগাস্ট দুপুর দেড়টায় পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। গত সাতদিন ডিবি অফিসে আমাদের ও আমাদের পরিবারের সঙ্গে নানা হয়রানি, নির্যাতন ও নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ছয় সমন্বয়ক আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নির্দেশেই আমাদের অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছিল। সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ছাত্র-নাগরিকের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সরকার এখনো শিক্ষার্থীদের ওপর দমননীতি অব্যাহত রেখেছে এবং সারাদেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করছে এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা প্রদান করছে। ছাত্র-নাগরিক হত্যার বিচার ও আটককৃত নিরপরাধ ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। সারা দেশে ছাত্র-নাগরিকদের প্রতি আহ্বান থাকবে সরকারের মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা ও দমন-পীড়নকে তোয়াক্কা না করে রাজপথে নেমে আসুন। শহীদের রক্ত বৃথা যাবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে নেওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর গতকাল তারা একটি বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতি পাঠানো ছয় সমন্বয়ক হলেন, মো. নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, নুসরাত তাবাসসুম ও আবু বাকের মজুমদার। এদিকে, রাজধানী ঢাকার আফতাবনগর, উত্তরায় গতকাল সকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মিছিল করেছেন। বৃষ্টিতে ভিজে মিছিলে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেয়। প্রতিবাদ জানায়। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার পরে আফতাবনগরে ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেছে। বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে মিছিল নিয়ে তারা রামপুরা ব্রিজ পার হয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে আবার ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। এ সময় মিছিলে থাকা বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর গলায় পরিচয়পত্র ছিল। ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সমাবেশে শিক্ষার্থীরা কোটা আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট সংঘাতে হতাহতের ঘটনায় বিচার দাবি করে। এ সময় তারা গ্রেফতার শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে স্লোগান দেয়। মিছিলের সামনে ও পেছনে পুলিশ ছিল। উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরে রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। বেলা ১১ টার দিকে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের অনেকেই স্কুলের পোশাক পরেছিল। অন্যদিকে, সরকারের মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ও দমন-পীড়নকে’ তোয়াক্কা না করে ছাত্র-নাগরিকদের রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দেয়েছেন ডিবি থেকে মুক্তি পাওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক। গতকাল বেলা ১১ টার দিকে পাঠানো বিবৃতিতে তারা বলেন, রাজপথে নেমে আসুন। শহীদের রক্ত বৃথা যাবে না। নিজেদের সঙ্গে ঘটে শহীদের রক্ত বৃথা যাবে না। বিবৃতি পাঠানো ছয় সমন্বয়ক হলেন, মো. নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, নুসরাত তাবাসসুম ও আবু বাকের মজুমদার। বিবৃতিতে ছয় সমন্বয়ক বলেন, মূলত আন্দোলন ও নেতৃত্বকে ছত্রভঙ্গ করতেই ১৯ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের গুম, গ্রেফতার, নির্যাতন ও হয়রানি করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় ‘নিরাপত্তার’ নামে ছয় সমন্বয়ককে সাতদিন ধরে ডিবি হেফাজতে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডিবি প্রধান নিরাপত্তার কথা বললেও আমাদেরকে আন্দোলন থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার জন্যই ডিবি হেফাজতে রাখা হয়েছিল। তারা বলেন, আমরা গুম, গ্রেফতার ও নির্যাতন থেকে নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা চেয়েছিলাম; আমরা আমাদের মত প্রকাশের অধিকারের নিশ্চয়তা চেয়েছিলাম। কিন্তু অসাংবিধানিক ও আইনবহির্ভূতভাবে আমাদেরকে ডিবি হেফাজতে আটকে রাখা হয়। প্রথমে নিরাপত্তার কথা বললেও পরে আদালতের কথা বলা হয়। আদালতের আদেশ ছাড়া নাকি আমাদের ছাড়া যাবে না। তারা আরও বলেন, যারা নিরস্ত্র ছাত্র-নাগরিককে গুলি করে হত্যা করে তাদের হেফাজতে কেউই নিরাপদে থাকতে পারে না। সরকারের কাছে আমরা এই প্রহসনের নিরাপত্তা চাই না। আমরা আমাদের ভাই বোনদের খুনের বিচার চাই।