আজকের দিন তারিখ ১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় নির্বাচনী সহিংসতা রোধে সিইসি দায়িত্বশীল হোন

নির্বাচনী সহিংসতা রোধে সিইসি দায়িত্বশীল হোন


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: জানুয়ারি ২৯, ২০২১ , ২:০১ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


নির্বাচনী সহিংসতার বিষয়টি অনেকটা নেই বললে চলে। কিন্তু চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ঘটনায় তা ফিরে আসার লক্ষণ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। নির্বাচনে দফায় দফায় সংঘর্ষ-সহিংসতা, গোলাগুলি, ককটেল বিস্ফোরণ, ২ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন স্থানে প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের নানা অভিযোগ উঠছে। শুধু অভিযোগ নয়, আচরণবিধি লঙ্ঘনের অনেক ঘটনা দৃশ্যমানও ছিল। এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে যে ভূমিকা প্রত্যাশিত, তা দেখা যায়নি। সহিংসতা রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভ‚মিকাও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে দলপ্রীতির অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগ আমরা শুনতে চাইনি। এমন সহিংস ঘটনাও দেখতে চাইনি। এটি দুঃখজনক। পূর্বে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার ২৭ বছর পর এবার নির্বাচনে রক্ত ঝরল। আগের পাঁচটি নির্বাচনে সংঘাত হলেও এবারের মতো সহিংসতা হয়নি ভোটের দিন। এবার কাউন্সিলর পদে বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা বেশি থাকায় শুরু থেকেই উত্তপ্ত ছিল ভোটের মাঠ। সেটির প্রভাব পড়েছে ভোটের দিন। বিশেষ করে ২০১০ ও ২০১৫ সালের দুটি নির্বাচনে কোনো ধরনের রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটেনি। ২০০৫ সালের নির্বাচনে ভোটের আগের দিন শ্রমিক লীগের এক কর্মী নিহত হয়েছিলেন। কিন্তু ভোটের দিন পরিস্থিতি ছিল স্বাভাবিক। ১৯৯০ সালে মিউনিসিপাল করপোরেশন থেকে সিটি করপোরেশনে রূপান্তরিত হয়। ১৯৯৪ সালে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র নির্বাচিত হন। ২০০০ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন তিনি। এ দুটি নির্বাচনে কোনো প্রাণহানি হয়নি। ২০০৫ সালে ক্ষমতাসীন দল বিএনপির মীর নাছিরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন মহিউদ্দিন চৌধুরী। ২০১০ সালে নির্বাচনে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপির মনজুর আলম। ভোটের দিন ফল ঘোষণার সময় সহিংসতা হলেও কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। ২০১৫ সালের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে দুপুরেই ভোট বর্জন করে বিএনপি। তবে সহিংসতা ছিল না। নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এই প্রতিষ্ঠানকে অগাধ ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এই ক্ষমতা প্রয়োগের বিষয়টি নির্ভর করে নির্বাচন কমিশনের দৃঢ়তার ওপর। অতীতে অন্যান্য নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় অনেকে নিহত হয়েছেন, শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, অনেকের বাড়িঘরে আগুন দেয়া হয়েছে; কিন্তু সেসব ঘটনার কোনো বিচার হয়নি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হয়নি, প্রশাসন নির্বাচন-পরবর্তী সব ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যকর ভ‚মিকা গ্রহণ করে বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা সমুন্নত রাখবে, জাতি হিসেবে এটাই সবার প্রত্যাশা। চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। অভিনন্দন তাকে।