আজকের দিন তারিখ ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার, ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদ
সম্পাদকীয় ঈদের আগেই বেতন-বোনাস পরিশোধ করুন

ঈদের আগেই বেতন-বোনাস পরিশোধ করুন


পোস্ট করেছেন: Dinersheshey | প্রকাশিত হয়েছে: মে ৮, ২০২১ , ১:২৩ অপরাহ্ণ | বিভাগ: সম্পাদকীয়


প্রতিবারের মতো এবারো ঈদের আগে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের বেতন-বোনাস নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তবে করোনা সংকটে এই উদ্বেগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। পোশাক কারখানায় চলতি মাসের বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে বিক্ষোভ-সড়ক অবরোধ করার খবর পাওয়া যাচ্ছে। ভোরের কাগজের অনলাইন খবরে জানা গেছে, দু-চারটি কারখানা বাদে দেশের হাজার হাজার কারখানা এখনো বেতন-বোনাস পরিশোধ করেনি। এমনকি গত মার্চ মাসের বেতন-বোনাসও ৫ শতাধিক কারখানার শ্রমিকরা এখনো পাননি। ঈদ যত এগিয়ে আসছে কারখানার মালিকরা ততই টালবাহনা শুরু করেছেন। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সদস্যভুক্ত মালিকরা নিয়মিত শ্রমিকদের বেতন দেন এমন উদাহরণ খুব কম আছে। এখন করোনা ভাইরাসে বৈশ্বিক সংক্রমণের কারণে বিদেশের বায়াররা ক্রয়াদেশ বাতিল করছে। ফলে মালিকরা শ্রমিকের বেতন দিতে পারছেন না, এমন ঘোষণা দিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, শ্রমিকরা যদি কাজই করে থাকেন তাহলে তাদের বেতন দেয়ার সঙ্গে পণ্য বায়ার কিনল নাকি কিনল না, তার সম্পর্ক থাকবে কেন? বিজিএমইএ বলেছে এবারে তাদের এক্সপোর্ট গত বছরের তুলনায় ৫০২ শতাংশ বেড়েছে। সুতরাং প্রচুর মুনাফা হয়েছে। তবে কেন তারা শ্রমিকদের সামান্য মাস বেতন বকেয়া রাখবে। বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ এবং দেশের রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় অংশ জোগান দেয় এই খাত। এই বিপুল মুনাফার জোগান আসে মূলত শ্রমিকদের সস্তা শ্রম থেকে। বছরের পর বছর সরকার বাজেটের মাধ্যমে গতানুগতিক পথে- এছাড়া বিভিন্ন অর্থনৈতিক অজুহাতে এই শিল্পের মালিকদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। কিন্তু দেখা যায়, পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে অনিশ্চয়তা লেগেই থাকে। করোনা ইস্যুতে নতুন করে সংকটে পড়ছে তৈরি পোশাক খাত। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ কর্তৃপক্ষ বলছে, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ১০ মের মধ্যে সদস্যভুক্ত সব কারখানার শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধের চেষ্টা চলছে। ঈদের আগেই সব কারখানা শ্রমিকদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করা হবে। তাদের বক্তব্য যেন ঠিক থাকে। শ্রমিকরা যেন সঠিক সময়ে তাদের বেতন বুঝে নিতে পারেন- বিজিএমইএ-বিকেএমএই এ ব্যবস্থা করবে। আমরা এর আগেও সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করেছিলাম, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ২ কোটি মানুষ এ শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। গুরুত্বপূর্ণ এ অবদান সত্ত্বেও পোশাক শিল্পকে সুরক্ষা দেয়া সম্ভব হয়নি। এ খাতের ওপর বারবার আঘাত এসেছে। এরপরও অনেক চড়াই-উৎরাই অতিক্রম করে গত কয়েক দশকের পথপরিক্রমায় দেশের তৈরি পোশাকশিল্প আজকের এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। যে কোনো দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা নিঃসন্দেহে সে দেশের শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। তাই নিশ্চিত করতে হবে শ্রমিকদের চাকরি নিরাপত্তা, বেতনের নিশ্চয়তা। দেশের বর্তমান দুর্যোগময় করোনা পরিস্থিতিতে কোনো ধরনের সামাজিক অসন্তোষ দেখতে চাই না। ঈদের আগে পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দ্রুত পরিশোধের অনুরোধ করছি। এ ব্যাপারে সরকারকে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে।